রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে দিবারাত্রি চলছে পুকুর খনন। প্রভাবশালী মহলের ছত্র ছায়ায় জমে উঠেছে পুকুর খননের কাজ। পরিবেশ সুরক্ষায় দ্রুত অবৈধ পুকুর খনন বন্ধ করতে মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কল্যাণ চৌধূরী।
অবৈধ পুকুর খননকারীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করা হলেও তেমন পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছেনা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের। অভিযোগের ভিত্তিতে কয়েকটি স্থানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা করা হলেও কাজে আসছেনা। প্রশাসনের অদৃশ্য নীরবতার কারণে দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে পুকুর খনন। অবৈধ পুকুর খননের ফলে বিপাকে পড়তে হচ্ছে কৃষকদের। উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে পুকুর খনন অব্যাহত রয়েছে।
প্রশাসনের কার্যকরী ভূমিকার অভাবে জমির মালিকরা অভিযোগ করলেও পাচ্ছেন না সঠিক বিচার। নিরুপায়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, থানার ওসিসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন করেছেন কৃষকরা। কৃষি জমিতে পুকুর খনন করা যাবে না মর্মে কৃষি মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র ও উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না।
অনেক কৃষক পুকুর খনন বন্ধে বাধা প্রদান করতে গেলেও তাঁদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। গত ২-৩ বছরে কয়েক হাজার বিঘা কৃষি জমিতে পুকুর খনন হয়েছে। এ ভাবে পুকুর খনন অব্যাহত থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বাগমারায় আবাদযোগ্য জমি শেষ হয়ে যাবে। এতে পরিবেশ বিপর্যয় সহ খাদ্য সংকটে পড়তে হবে। পুকুর খননের মাটি ইটভাটা সহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রির ফলে রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই দুর্ঘটনায় পড়তে হচ্ছে যানবহণ সহ পথচারিদের। ফলে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রাস্তাগুলো নষ্ট হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা অনিল কুমার সরকার বলেন, বাগমারায় কোন ভাবেই ফসলী জমিতে পুকুর খনন করা যাবে না। পুকুর খনন বন্ধে এরইমধ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মাসিক সভায় তথ্য উত্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা প্রশাসনকে অবৈধ পুকুর খননকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বলা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারুক সুফিয়ান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এরইমধ্যে কয়েকটি পুকুরে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। সেই সাথে ভ্রাম্যমান আদালতে কয়েক জনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা
হয়েছে। কাউকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুকুর খননের অনুমতি দেওয়া হয়নি। অবৈধ পুকুর খননকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কৃষকের অভিযোগের ভিত্তিতে কয়েক জন পুকুর খননকারীকে পুকুর খনন বন্ধ করতে নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।