ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে সরকারের প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মুক্তিযোদ্ধাভবন উদ্বোধন কবে হবে তা কেউ জানে না। আধুনিক বহুতল মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মান কাজ আড়াই বছর পুর্বে শেষ হলেও কোন কাজে উেিদ্বাধন না করার জন্য। যেখানে উদ্বোধনের আশায় ভবন দেখতে দেখতে ইতোমধ্যেই মারা গেছেন স্থানীয় শতাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধা।
এর মধ্যে যে মুক্তিযোদ্ধারা এখনও জীবিত আছেন তারাও রাজনৈতিক মারপ্যাঁচের কারণে ভবনটির উদ্বোধন দেখে যেতে পারেন কিনা তা নিয়ে রয়েছেন অনিশ্চয়তার মধ্যে। কবে নাগাদ উদ্বোধন হবে তাও নিশ্চিত করে বলতে পারছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কেউই। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের দাবী দ্রুত উদ্বোধন করা হোক মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সটি।
সরেজমিনে ঘুরে স্থানীয় প্রকৌশলী অধিদপ্তরের সূত্রে জানা যায়,‘উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের সহায়তায় ২০১৭-২০১৮ গত অর্থবছরে আশুগঞ্জ উপজেলার পাশে ৮ শতক জায়গার উপরে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দেয় মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়। ভবনটির মোট ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ৪৫ লক্ষ ৮১ হাজার ১ শত ৭৫ টাকা।
যা বাস্তবায়ন করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলীর অধিদপ্তর। ভবন নির্মাণ কাজের টেন্ডার পান স্থানীয় ঠিকাদার ষ্টার লাইট সার্ভিসেস লিমিটেড এ- মেসার্স উদয়ন বিল্ডার্স (জেভি)। ২০১৮ সালের শেষ দিকে তারা নির্মাণকাজ শুরু করেন। পরে ২০২০ সালের জুন মাসে নির্মাণ কাজ শেষ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনের মধ্যে ভবনটি হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি।
অনুসন্ধানে আরও জানা যয়, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সটি নির্মাণের পর পরই শুরু হয় তামাশা কে করবেন উদ্বোধন? মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী নাকি স্থানীয় এমপি? রাজনৈতিক বিভিন্ন গ্রুপিংয়ের কারণে প্রায় তিন বছর ধরে আটকে আছেন ভবনটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন। কবে নাগাদ উদ্বোধন হবে তাও নিশ্চিত করে বলতে পারছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কেউই।
আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা আবদুল করিম বলেন, সরকারি খরচায় এমন সুন্দর একটি ভবন পেয়ে খুবই খুশি মুক্তিযোদ্ধারা কিন্তুু ভবনটি উদ্বোধন না করায় ব্যবহার করতে পারছে না জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানরা। যার কারণে নষ্ট হচ্ছে ভবনের সৌন্দর্য। অযতেœ অবহেলায় পড়ে আছে লাখ লাখ টাকা মূল্যের আসবাবপত্র।আমরা জীবনের মেষ প্রান্তে এসে ভবনটি ব্যবহার করতে পারব কি না তা জানি না। মুক্তিযোদ্ধা আবদুল করিম বলেন,দ্রুত মুকিআতযোদ্ধা ভবনটি উদ্বোধন করা হোক।
স্থানীয় একাধিক মুক্তিযোদ্ধা নাম প্রকাশ না করে বলেন, আর কিছু না। শুধু রাজনৈতিক মারপ্যাচের কারণে পাঁচ বছর ধরে ভবনটি তালাবদ্ধ অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। উদ্বোধনের আশায় ভবন দেখতে দেখতে ইতোমধ্যেই আশুগঞ্জ উপজেলার ৫১৬ জন মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে বেচে আছেন মাত্র ২৩০ থেতে ২৩৫জন। অর্ধেকেরও বেশি মুক্তিযোদ্ধা মারা গেছেন। প্রতিনিয়ত মারা যাচ্ছেন।এর মধ্যে যারা এখনও জীবিত আছেন তারা উদ্বোধন দেখে যেতে পারেন কিনা তা নিয়েও অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। এখন আমরা সবই মারা যাওয়ার পর এ ভবন পেলে কি লাভ হবে আমাদের। কবে নাগাদ উদ্বোধন হবে তাও কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারছে না তাই আমাদের দাবী দ্রুত উদ্বোধন করা হোক মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সটি।
এ বিষয়ে আশুগঞ্জ উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছে।এরপর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মহুদয় এবং মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী মহুদয়কে জানিয়েছি। মন্ত্রী মহুদয় উদ্বোধনের তারখি দিলে সেই তারেিখ উদ্বোধন করা হবে।