দেশে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন কেন্দ্র জোয়ার ভাটার নদী বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ হালদা নদীতে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে মা মাছ ৩য় দফা ডিম ছেড়েছে। এই জোতে বজ্রসহ প্রবল বর্ষন থাকায় নদীতে পাহাড়ি ঢলের পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে। বজ্রসহ বৃষ্টিপাত মাছের ডিম ছাড়ার অনুকূল পরিবেশ। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে বারোটার দিকে নদীতে জোয়ার চলাকালে মা মাছ ডিম ছাড়তে শুরু করে। ইতঃপূর্বে কয়েক জো চলে গেলে মাছ ডিম না ছাড়ায় ডিম আহরনকারীরা হতাশ হয়ে পড়েছিল। অনেকে ডিম সংগ্রহের জন্য ভাড়া করা নৌকা ও সরঞ্জাম ছেড়ে দিয়েছে। তবে ডিম আহরনকারীদের প্রত্যাশা ছিল জুন মাসের তিথিতে মাছ পুনরায় ডিম ছাড়বে। এজন্য ডিম আহরনকারীরা বৃষ্টি ও বজ্রপাত, পাহাড়ী ঢলের আলামত দেখে গত বৃহস্পতিবার রাতে নদী পাহাড়ায় ছিল। জোয়ারের সাথে সাথে মাছ ডিম ছাড়তে শুরু করে। রাতে গড়দুয়ারা নয়াহাট, ছিপাইরঘাট, কাগতিয়ার টেক, মাছুয়াঘোনা, আজিমার ঘাট, নাপিতের ঘাট প্রভৃতি স্হানে মাছ ডিম ছাড়ে। ভোর পর্যন্ত ডিম ছাড়া অব্যাহত ছিল। ডিম আহরনকারী সংগৃহীত ডিম মাছুয়াঘোনা, শাহ মাদারী মদুনাঘাট ও গড়দুয়ারা নয়া এলাকায় স্হাপিত হ্যাচারী ডিম থেকে রেনু ফোটানোর জন্য কাজ শুরু করে। ডিম আহরনকারী তথ্য মতে প্রায় দুই শ নৌকায় পাঁচ শ ডিম আহরনকারী ডিম সংগ্রহ করে। শুক্রবার দুপুর থেকে আবারো মাছ ডিম ছাড়তে থাকে বলে জানান সংগ্রহকারীরা।
মাছুয়াঘোনার ডিম সংগ্রহকারী মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান তিনি এবং এই এলাকার ডিম আহরনকারী রাতে প্রায় আট বালতি ডিম সংগ্রহ করছে।
গড়দুয়ারা নয়াহাট এলাকার ডিম সংগ্রহকারী মোহাম্মদ কামাল সওদাগর জানান, এবার ডিম সংগ্রহের জন্য তিনি আটটি নৌকা ও ডিম সংগ্রহের সরঞ্জাম নিয়ে প্রস্তত ছিল। কিন্তু গত ১৬ মে নদীতে মাছ যে পরিমান ডিম ছেড়েছে, এতে তিনিও অন্যান্য ডিম সংগ্রহকারীরা হতাশ হয়ে পড়েছে। তবে তিনি আশাবাদী ছিলেন আসন্ন বিভিন্ন জো তে মাছ ডিম ছাড়বে। প্রথম দফায় হতাশ হয়ে তিনি চারটি ভাড়া করা নৌকা ছেড়ে দিয়েছে। বর্তমানে চারটি নৌকায় তিনি সাত বালতি ডিম পেয়েছে বলে জানান।
মদুনাঘাট এলাকার ডিম সংগ্রহকারী আশু বড়ুয়া জানান, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে মাছ নদীতে ডিম ছেড়েছে। ঢল বজ্রসহ বৃষ্টিপাত দেখে তিনি ও ডিম আহরনের জন্য নদীতে নামেন। তিনি দুই / আড়াই বালতির মত ডিম সংগ্রহ করতে পেরেছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি দুপুরের দিকে পুনরায় ডিম সংগ্রহের নদীতে নামেন। হালদা গবেষক অধ্যাপক ডঃ মনজুরুল কিবরিয়া গনমাধ্যমকে নদীতে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ডিম ছাড়ার কথা নিশ্চিত করে বলেন ডিমের পরিমান কম ছিল। জো, বজ্রসহ বৃষ্টিপাত ওপাহাড়ী ঢলের তোড় মা মাছের ডিম ছাড়ার উপযুক্ত পরিবেশ। পরিবেশ পেয়ে ডিম ছেড়েছে মাছ।