শুরুর দিকে ফুসফুসের ক্যানসার হয়েছে কিনা বুঝা খুব মুশকিল। এই মরণব্যাধির ঝুঁকির মধ্যে তরা বেশি থাকেন, যারা প্রচুর ধুলাবালুর মধ্যে কাজ করেন, চল্লিশোর্ধ্ব ধূমপায়ী বা তামাকসেবীরা। সাধারণত চল্লিশ শতাংশ রোগীর ফুসফুসের ক্যানসার একবোরে শেষ পর্যায়ে গিয়ে ধরা পড়ে। তবে কিছু উপসর্গ আছে যা দেখে বুঝা যেতে পারে মরণব্যাধি ফুসফুসে ক্যানসার হয়েছে কিনা।
ঘন ঘন সর্দি-কাশি: যে কাশি আট সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয়ে যায় এবং ক্রমশ তীব্র আকার ধারণ করে বুকে ব্যথা তৈরি করে, তখন অবশ্যই সতর্ক হওয়া উচিত। আবার যদি কিছু দিন পর পর ঠা-া লেগে থাকে, তবে বুঝতে হবে শরীরের ভেতরে কোনো সমস্যা হয়েছে। মনে রাখবেন, সাধারণ কাশি সপ্তাহ খানেকের বেশি স্থায়ী হয় না। তাই দীর্ঘদিন যদি কাশি না কমে, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
হঠাৎ শ্বাসকষ্ট: প্রতিদিনের জীবনযাপনে অল্প পরিশ্রমে যদি শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায় তাহলে অবহেলা করা ঠিক হবে না। হঠাৎ শ্বাস-প্রশ্বাসের ধরনে বদল আসা ফুসফুসের ক্যানসারের অন্যতম লক্ষণ। ফুসফুসে টিউমার তৈরি হলে বায়ু প্রবাহের পথ রুদ্ধ হতে পারে। আবার কখনও কখনও টিউমারের প্রভাবে ফুসফুসে পানি জমে যেতে পারে। অল্প হাঁটাহাঁটি কিংবা সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করলেই যদি দম ফুরিয়ে আসার উপক্রম হয়, তবে তা উপেক্ষা করা ভুল হবে।
ক্লান্তি সবসময়: সর্বক্ষণ ক্লান্ত লাগলে উদ্বেগ, অবসাদের মতো সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবে এইসব উপসর্গ ক্যানসারের লক্ষণও হতে পারে। ফুসফুস ঠিক ভাবে কাজ না করলে শরীরে অক্সিজেনের অভাব হয়। তা থেকেই ক্লান্তি আসতে পারে।
কণ্ঠস্বর পরিবর্তন: হঠাৎ করে গলার আওয়াজ কি অন্য রকম লাগছে, তাহলে সাবধান হোন। সর্দি-কাশি হলে এমনটা হওয়া স্বাভাবিক। তবে দীর্ঘদিন গলা বসে যাওয়া, গলার স্বর ভারী হয়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
বুকে কফ জমা: বুকে কফ জমলে যদি তা আর না যেতে চায়, তবেও ফুসফুসের হাল নিয়ে কিছুটা সতর্ক হওয়া দরকার। কফের সঙ্গে রক্তক্ষরণ হওয়া ভালো লক্ষণ নয়। এর সঙ্গে হাসতে গেলে বা কাশির সময় যদি বুকে ব্যথা অনুভূত হয়, তাহলে সময় নষ্ট না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
মুখের অংশ ফোলে যাওয়া: মুখের এক দিকটা ফোলা দেখালে কিছুটি ভাবনা তো হতেই পারে। ঠা-া লাগলে কিংবা দাঁতে ব্যথা হলে এমনটা হতে পারে। কিন্তু এই ফোলা ভাব দীর্ঘদিন থাকলে অবশ্যই সতর্ক হবেন, এটি কিন্তু ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।
ব্যথা ও জ¦র: দীর্ঘদিন যদি ঘাড়, পিঠ, বুক, বাহুতে ব্যথা হতে থাকে তাহলে সর্তক হোন। শতকরা ৫০ ভাগ রোগীর ফুসফুস ক্যানসার ধরা পড়ে বুক ও কাঁধের ব্যথা নিয়ে। সাধারণত কাশির সময় এই ব্যথা বেড়ে যায়। মাঝে মাঝে কারও কারও জ¦র হতে পারে।