নাটোরের সিংড়ায় সিফা খাতুন নামের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক ফরহাদুল আলমের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নাটোরের সিংড়া উপজেলার একান্নবিঘা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থী সিফা খাতুন চামারী ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের ভ্যান চালক রেজাউল করিমের মেয়ে বলে জানা গেছে। ঘটনার পর থেকে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে রোববার গণমাধ্যম কর্মীদের কাছ থেকে বিষয়টি জানার পর ঘটনা তদন্তে দুই সদস্য তদন্ত কমিটি গঠন করেছে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আলী আশরাফ।
এলাকাবাসী ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) উপজেলার একান্নবিঘা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা (ব্ল্যাড ক্যাম্পেইন) করাতে যায় স্থানীয় সূর্যের হাসি ক্লিনিকের একটি দল। ক্যাম্পেইন এর শেষ পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের মাঠের মধ্যে এলোমেলো ভাবে ঘুরাফেরা করতে দেখে লাঠি নিয়ে এলোপাতারি মারমিট শুরু করেন প্রধান শিক্ষক এস.এম ফরহাদুল আলম। এ সময় তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সিফা খাতুনকে বেধরক পিটুনি দেন প্রধান শিক্ষক। এতে তার বাম হাত ভেঙে যায়। ভয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় শ্রেণি কক্ষে ফিরে যায় শিক্ষার্থী শিফা খাতুন। পরে বাসায় ফিরে বিষয়টি পরিবারের লোকজনকে জানানে প্রথমে তাকে নাটোর সদর হাসপাতাল এবং পরে নাটোর ট্রমা সেন্টার ও হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এবিষয়ে শিক্ষার্থীর বাবা ভ্যান চালক রেজাউল করিম ও মা তছলিমা বেগম বলেন, আমাদের মেয়েকে অন্যায় ভাবে মারা হয়েছে। তার একটি হাত ভেঙে গেছে। এর জন্য বিচার দাবি করেন তারা। আর অন্য কোন শিক্ষার্থীর সাথে এই ধরণের ঘটনা যেন আর না ঘটে সে জন্য দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এবিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক এস.এম ফরহাদুল আলমের মুঠোফোনে বার বার ফোন (০১৭৪০-৮৬৯২২০) দেওয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রুহুল আমিন বলেন, এটা খুব দুঃখজনক ঘটনা। শুনেছি প্রধান শিক্ষক অন্যায় ভাবে ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে। এখন মিমাংসার প্রস্তুতি চলছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আলী আশরাফ বলেন, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত তিনি কোন অভিযোগ পাননি। তবে বিষয়টি ইউএনও স্যারের কাছে থেকে জানার পর ঘটনা তদন্তে দুই সদস্য তদন্ত কমিটি গঠন করে বিদ্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
সিংড়ার ইউএনও এম.এম সামিরুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।