বরগুনার পাথরঘাটা খাদ্যগুদামের ওসিএলএসডির বিরুদ্েেব বিধি মোতাবেক তালিকাভূক্ত কৃষকদের কাছ থেকে আমন ধান ক্রয় না করে অনিয়মের ভিত্তিতে পাইকারদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করে গুদামজাত করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থ বছরে পাথরঘাটা উপজেলা খাদ্যগুদামে ৬৯৪ মেট্রিক টন আমন ধান ক্রয়ের বরাদ্দ দেয়া হলে ৫৪৫ মেট্রিক টন ধান সরকারী বিধি মোতাবেক সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয় না করে ধানের পাইকারদের কাছ থেকে নানা অনিয়মের ভিত্তিতে ক্রয় করেন ওসিএলএসডি আবুল কালাম আজাদ।
সরেজমিনে জানাগেছে,, লটারীতে বিজয়ী কৃষকদের পাথরঘাটা খাদ্যগুদামে হাজির করে তাদের কাছ থেকে ছবি এবং ব্যাংকের চেকে স্বাক্ষর রেখে যাতায়াত বাবদ ৫'শ থেকে ১ হাজার টাকা ধরিয়ে দেন বলে জানান, একাধিক কৃষকরা।
রায়হানপুর ইউনিয়নের বেতমোর গ্রামের কৃষক আনিচুর রহমান চৌকিদার বলেন, আমাকে এক হিন্দু লোক ফোন দিলে আমি খাদ্যগুদামে যাই। সেখানে চেকে স্বাক্ষর রেখে ১ হাজার টাকা দেয় আমাকে। আমি কোন ধান দেইনি গুদামে। এর বেশী কিছু আমি জানিনা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পাথরঘাটা খাদ্যগুদামের একজন শ্রমিক বলেন, অনেক কৃষক গুদামে ধান দেয়নি। ওসিএলএসডি কালাম কৃষকদের গুদামে ডেকে এনে চেকে স্বাক্ষর রেখে যাতায়াত ভাড়া দিয়ে দেয়। ওই কৃষকদের নামের ধান রিপন খা, মজনু, সাইফুল, মজিবর মাষ্টার, জলিল, এবং শশধর এই ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ক্রয় করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
চরদুয়ানীর ধান ব্যবসায়ী শশধরের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি একাই খাদ্যগুদামে ৩৫০ মেট্রিক টন ধান দিয়েছি, বাকীটা অন্য ব্যবসায়ীরা দিয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কৃষকদের গুদামে ডেকে চেকে স্বাক্ষর রেখে পরবর্তীতে প্রতি কৃষকের নামে বরাদ্দ ৩ টন ধানের মূল্য ৮১ হাজার টাকা তাদের অগ্রনী ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে উত্তোলন করা হয়। খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা কালাম আমার ৩ টন ধানের মূল্য ৮১ হাজার টাকা মেরে দেয়। আমি অনেকবার তার কাছে এই টাকা চাইলে দেবো দেবো করে শেষে বলেন, পরবর্তীতে ব্যবসা বানিজ্য করলে ওটা সেরে দেবো।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা খাদ্যগুদামের ওসিএলএসডি আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ্যপসের মাধ্যমে কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা হয়েছে। কোন রকম দুই নম্বরি করার সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ আবদুল হাকিম বলেন, অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন আল মুজাহিদ বলেন, বিষয়টি শুনলাম তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্হা নেয়া হবে।