লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর পানি পূনরায় বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার ও ধরলার পানি বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটারের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রবাহিত হচ্ছে। সোমবার (২০ জুন) দুপুর ১২টায় তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে ও ধরলার শিমুলবাড়ি পয়েন্টে এ পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়। হঠাৎ এমন পানি বৃদ্ধিতে তিস্তার তীরবর্তী অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যার রুপ ধারন করছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকল প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
জানা যায়, ভারীবর্ষণ আর উজানের ঢলে গত সপ্তাহ থেকে লালমনিরহাটের তিস্তা, ধরলা, রতœাই, সানিয়াজান নদীর পানি উঠানামার মধ্যে রয়েছে। তিস্তার পানি শনিবার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার উপরে উঠলে গতকাল তা নেমে ৫ সেন্টিমিটারের নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। আজ সকাল থেকে পানি দ্রুত বাড়তে থাকে এবং দুপুর ১২টা থেকে আবারও তীব্র গতিতে পানি বৃদ্ধি শুরু হয়ে ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৮ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধরলার শিমুল বাড়ি পয়েন্ট এলাকায় ৬ সে. মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
চলমান বন্যায় তিস্তা নদীর দুই তীরের নি¤œাঞ্চলে পানিবন্দী হয়ে আছে হাজার হাজার পরিবার। গতকাল কিছুটা কমে রাস্তাঘাট থেকে পানি নেমে গেলেও অনেক বসতবাড়িতে হাঁটু পানি ছিল কিন্তু আজ আবার পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। কয়েকদিন ধরেই নানান দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন তিস্তা পারের লোকজন। নতুন করে পানি বৃদ্ধিতে এসব এলাকায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দিলে চরম খাদ্য সংকটে পড়বে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বানভাসি মানুষ।
আদিতমারী মহিষখোচা এলাকার লোকমান হোসেন বলেন, কয়েকদিন থেকে পানি বাড়ছে আর কমছে। এখনো পানি পুরোপুরি নেমে যায়নাই। কষ্ট করে দিন কাটাচ্ছি। আবারও বন্যা হলে নিরুপায় হয়ে পড়বো আমরা।
জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, বন্যার্তদের সহযোগিতায় সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। শুকনো খাবার সহ নগদ অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। নদী ভাঙ্গনে জিও ব্যাগ ও তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
আদিতমারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মফিজুল ইসলাম বলেন, উপজেলার মহিষখোচা, দুর্গাপুর, ভাদাই ইউনিয়নের পানিবন্দী লোকজনের তালিকা করে সাহায্য করা হচ্ছে। বন্যাদুর্গতদের সকল সহযোগীতা অব্যাহত আছে। নতুন করে বন্যার বিষয়ে আমরা সজাগ রয়েছি।
লালমনিরহাট জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, তিস্তা ও ধরলার পানি বেড়ে আজ বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। নদী ভাঙ্গণ রোধে বিভিন্ন যায়গায় জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। এছাড়াও জরুরি প্রয়োজনে যেকোনো পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।