ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার চরহরিরামপুর ইউনিয়নের আরজখার ডাঙ্গী গ্রামে ভাঙন কবলিত পদ্মা পার থেকে দিনরাত বালু উত্তোলন ও পাচারের মহড়া চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করে চলেছেন এলাকাবাসী। ওই গ্রামের পদ্মা পার এলাকায় গত এক সপ্তাহ ধরে ভাঙন অব্যাহত থাকলেও থেমে নেই বালু উত্তোলন ও তা সরবরাহ কাজ। ওই গ্রামের প্রবাবশালী জুলহাস শিকদার ওরফে জুলু মেম্বার (৫০) এর নেতৃত্বে ভাঙন কবলিত পদ্মার পার এলাকায় বেকু মেশিন দিয়ে দিনরাত খনন করে ট্রাক ও লড়ি গাড়ীযোগে উপজেলা জুড়ে সরবরাহ করা হচ্ছে ভরাট বালি। ইতিমধ্যে, তারা পদ্মা পার এলাকা গভীর খননের করে বালু উত্তোলন করার ফলে নদীর প্রবহমান জলসীমানা ফসলী মাঠ ভেদ করে প্রায় অর্ধ কি.মি. পশ্চিমুখী দুরত্বের জনবসতি এলাকার প্রধান সড়ক পর্যন্ত গিয়ে পড়েছে। এতে হুমকীর মুখে রয়েছে পদ্মা পারের আরজখার ডাঙ্গী গ্রাম ও ইন্তাজ মোল্যার ডাঙ্গী গ্রামের অন্ততঃ ৩শ’ বসতি পরিবার।
বুধবার স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, গত বছর পানি উন্নয়ন বোর্ড পদ্মা নদী ড্রেজিং প্রকল্প চলাকালিন ওই গ্রামের ফসলী মাঠের উপর দিয়ে বালুস্তুপ ফেলে রাখেন। পরবর্তিতে ড্রেজিংকৃত বালুস্তুপ টেন্ডারমূলে স্থানীয় প্রভাবশালী জুলহাস শিকদার কিনে নিয়ে গত এক বছর ধরে উপজেলা জুড়ে বালু পাচার করে চলেছেন। অভিযোগ রয়েছে, সংশ্লিষ্ট প্রশাসন টেন্ডারমূলে পদ্মা ড্রেজিংকৃত বালুস্তুপ বিক্রির পর তা অপসারনের জন্য তিন মাস সময়সীমা নির্ধারন করে দেন। কিন্তু ওই সময়সীমা অতিক্রম করে এক বছর পার হওয়ার পরও পাচারকারীরা ভাঙনমুখী পদ্মা পার এলাকা থেকে গভীর গর্ত করে ৮/১০টি ট্রাক লড়ি দিয়ে দিনরাত বালু পাচার করে চলেছেন। তারা টেন্ডারকৃত বালৃুস্তুপের পরিমাপ ঠিক না রেখে পদ্মা পারে গভীর গর্ত করে বালু খনন করে পাচার করছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করে চলেছেন। এতে পদ্মা পারের ফসলী মাঠের একাংশ এখন গভীর জলমহালে পরিনত হয়েছে। একই গ্রামের আলমগীর মাঝি (৪২) জানান, “ বেশ কিছুদিন ধরে বালু পাচারকারীরা ভাঙনমুখী পদ্মা পার এলাকা গভীর খনন করে পদ্মা নদী বসতি পরিবারের নিকটে এনে দিচ্ছে অথচ এ ব্যপারে কারো কোনো মাথা ব্যাথা নেই”। অভিযোগ রয়েছে, ওই গ্রামের জুলহাস শিকদারের সাথে স্থানীয় প্রভাবশালী ওবায়দুল বারী দীপু (৫৫) রুবেল হোসেন (৪০) ও রাজু আহম্মেদ (৩৭) মিলে দিনরাত ৮/১০টি ট্রাক ও লড়ি গাড়ীযোগে গ্রামীন অবকাঠামোর পাকা ও ইটের রাস্তার ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে বহাল তবিয়তে বালু পাচার করলেও এলাকার অনেকই তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস করে না।
এ ব্যপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানজিলা কবির ত্রপা বলেন, “ পদ্মা পার থেকে বারু পাচারের বিষয়ে বার বার সভা পরামর্শ করে নিষেধ করা হয়েছে। জুলহাস শিকদার ৩০ জুন পর্যন্ত সর্বশেষ সময় নিয়েছেন। তিনি আরও জানান, পদ্মায় ভাঙন দেখা দিলে বালু উত্তোলন রোধ করতে হবে এবং তিনি দ্রুত ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান”। একই দিন ভাঙন কবলিত পদ্মা পারের বালু পাচারকারী জুলহাস শিকদার জানায়, “ আমি টেন্ডারমূলে পদ্মা পারের বালু কিনে নিয়েছি, তাই বালু অপসারন করতে আমার যতদিন সময় লাগে আমাকে ততদিনই সময় দিতে হবে। প্রশাসনের ভিন্ন চিন্তা করে লাভ নেই, একবার ৩০ জুন পর্যন্ত সময় নিয়েছি আবারও আমি দীর্ঘ সময় চেয়ে পূণঃবার আবেদন করবো”।