আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে জমে উঠেছে রাজিবপুর পশুহাট। পশুহাটে নিয়ম বহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। নিয়মানুযায়ী শুধু ক্রেতার নিকট থেকে সরকার নির্ধারিত খাজনা আদায়ের নির্দেশ থাকলেও ক্রেতা-বিক্রেতা দু’জনকেই গরু প্রতি গুনতে হচ্ছে ৪’শ টাকা করে মোট ৮’শ টাকা। এতে হাটে আগত ক্রেত-বিক্রেতাদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে রাজিবপুর কোরবানির পশু হাট ঘুরে জানা গেছে, সীমান্ত ঘেঁষা রাজিবপুর উপজেলায় একটি মাত্র পশুর হাট যা প্রতি মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার দুই দিন চালু থাকার কথা। ঈদকে সামনে রেখে শনিবারও যোগ করে তিন দিন করা হয়েছে এই হাটটি।
হাটে কোরবানির পশু আমদানী চোখে পড়ার মত। স্থানীয় ক্রেতা-বিক্রেতাসহ ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ বিভিনন্ন জেলা থেকেও এসেছে ব্যবসায়ীরা। প্রায় সকলেরই অভিযোগ অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের। পুরো হাট ঘুরে কোথাও দেখা মেলেনি পশু ক্রয়-বিক্রয়ের খাজনা আদায়ের পরিমাণ সম্পর্কিত সাইনবোর্ড বা ব্যানার। এতে সাধারণ ক্রেতা-বিক্রেতারা পশু ক্রয়-বিক্রয়ের খাজনার পরিমাণ সম্পর্কে জানতেও পারছে না। সরকারী বিধি অনুযায়ী গরু প্রতি শুধু ক্রেতার নিকট নির্ধারিত খাজনা আদায়ের নির্দেশনা থাকা সত্বেও কাউকে তোয়াক্কা না করে উভয় পক্ষ থেকে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে গরু প্রতি ৮’শ টাকা। ছাগল বা ভেড়া প্রতি নেয়া হচ্ছে ৩’শ থেকে ৪’শ টাকা পর্যন্ত। এক্ষেত্রে খাজনা আদায়ের কোন প্রকার রশিদ প্রদান করা হয় না।
চট্টগ্রাম থেকে আগত ব্যবসায়ী ইয়ামিন, তানভিরুল আলম রুবেল, আব্দুল গফুর, সিলেট থেকে মতিয়ার, বাবলু এবং বকশীগঞ্জ থেকে আগত ব্যবসায়ী নয়ামিয়াসহ অনেকেই জানিয়েছেন, “হাটে প্রচুর গরু আসছে। গত বছরের তুলনায় দাম স্বাভাবিক। কিন্তু খাজনার পরিমান বেশি।”
রাজিবপুর বাজারে গরু বিক্রেতা বালিয়ামারী নয়াপাড়া গ্রামের আব্দুর রহিম, কর্তিমারীর মরতুজ আলী, কারখানা পাড়ার আবুল হাশেম, চিলমারীর মগবুল হোসেনসহ অনেকেরই অভিযোগ অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের বিষয়ে। এ বিষয়ে আবুল হাশেম বলেন “আমি সারা বছর কষ্ট কইরা গরু পালছি। অভাবের জন্য গরু বেইচ্চা আমারও খাজনা দেওন লাগলো ৪’শ ট্যাকা।” আবু তালেব নামের একজন ক্রেতা জানান, “গরু বেচা-কেনার পর চালানে শুধু গরুর দাম লেখা হয়, কিন্তু খাজনা লেখা নাই । গরু কিনলেও ৪’শ, আবার বিক্রি করলেও ৪’শ টাকা খাজনা নেয়।”
অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের বিষয়ে রাজিবপুর হাট ইজারাদার প্রফেসর আব্দুল হাই এর নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান, “নিয়ম অনুযায়ী খাজনা আদায় করা হচ্ছে। চিলমারী, রেীমারী ও অন্যান্য হাটেও আট শত টাকা নেয়া হচ্ছে, আমরাও আট শত টাকা নিচ্ছি।”
এ বিষয়ে রাজিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত চক্রবর্তী সাংবাদিককে জানান, “অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের বিষয়ে তদন্ত করে সত্যতা মিললে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।”