আরও জনমুখী সেবা দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বালিয়াকান্দির এসি ল্যান্ড মো. হাসিবুল হাসান। পুরস্কার প্রাপ্তির বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি ভবিষ্যতে আরও জনমুখী সেবার বিষয়টি ব্যক্ত করেন।
সম্প্রতি জেলার সেরা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন। পেয়েছেন শুদ্ধাচার পুরস্কারও। তিনি রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে কর্মরত আছেন। গত রোববার (২৬) জুন রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খান তাঁর হাতে ক্রেস্ট, সনদ এবং নগদ অর্থ তুলে দেন।
মো: হাসিবুল হাসান গত ০৭ আগষ্ট, ২০২১ তারিখে বালিয়াকান্দি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে বালিয়াকান্দিতে যোগদান করেন। এর আগে তিনি কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এনডিসি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ৩৬তম বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের এই কর্মকর্তা ২০১৮ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যোগদান করেন। ২০২১ সালের ২১ অক্টোবর থেকে ৪ঠা মে পর্যন্ত ২০২২ তিনি বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে দায়িত্বপালন করে ‘জনসেবায় প্রশাসন’ সেবা নিশ্চিত করেন। মাত্র ৮ মাসে তিনি প্রায় ৩ হাজার ৫শত নামজারী সম্পন্ন করেছেন। তাঁর জন্মস্থান ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলায়।তাঁর স্ত্রী ৩৬তম বিসিএস (শিক্ষা ক্যাডার)। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি এক সন্তানের জনক।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সততা ও নৈতিকতা, সেবা গ্রহিতাদের সেবা প্রদান, পেশাগত দক্ষতা ও তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার, অধস্তন কর্মচারীদের তত্ত্বাবধায়ন, দলগত কাজে সমন্বয়, সময়ানুবর্তিতা ও শৃঙ্খলাবোধ, কর্তব্যনিষ্ঠা ও স্ব-প্রণোদিত উদ্যোগ, উদ্ভাবন ও সংস্কার কাজে আগ্রহ, উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব দায়িত্বপালন এবং বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি এবং শুদ্ধাচার কৌশল কর্ম-পরিকল্পনা নিশ্চিত করায় তিনি ২০২১-২২ অর্থ বছরে শুদ্ধাচার পুরস্কার পেয়েছেন। একই অর্থ বছরে তিনি মিস কেস ব্যবস্থাপনা, সরকারি সম্পত্তি উদ্ধার, ভূমি উন্নয়ন কর আদায়, জনগনের সাথে আচরণ, নামজারি নিষ্পত্তি. অর্পিত সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা, অফিস ব্যবস্থাপনা, সেবা প্রদানের মানসিকতা, অধনস্ত অফিস পরিদর্শন, সততা-সুনাম, জনবল ও সম্পদের ব্যবহার নিশ্চিত করে জেলার সেরা এসি ল্যান্ড নির্বাচিত হন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা জানান, ভূমি খাতে ইউনিয়ন পর্যায়ে কতিপয় দুষ্টু প্রকৃতির কর্মকর্তা, কর্মচারী রয়েছে। অনৈতিক সুবিধা নিয়ে তারা ভুলভাল তথ্য দিয়ে নামজারীসহ বিভিন্ন কাজ সম্পন্ন করার চেষ্টা করে থাকেন, যা হাসিবুল হাসান স্যারের মাধ্যমে সফল হতে পারেননি। নথি খুটিয়ে খুটিয়ে নির্ভুলভাবে সম্পাদন করেছেন। এক্ষেত্রে হাসিবুল হাসান স্যার প্রতিটি কাজ স্বপ্রনোদিত প্রচেষ্টা, দক্ষতা এবং সততার সাথে সম্পন্ন করেছেন বলেই তিনি জেলার সেরা এসি ল্যান্ড হয়েছেন, পেয়েছেন শুদ্ধাচারের পুরস্কারও। তবে এ খাতে বহু সংখ্যাক জনবলকে দুর্নীতিমুক্ত রেখে শতভাগ হয়রানী এবং দুর্নীতিমুক্ত জনসেবা নিশ্চিত করা প্রায়ই অসম্ভব।
শুদ্ধাচার পুরস্কার পাওয়ার পর সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাবিবুল হাসান বলেন, কর্মস্থলে সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করেছি। আমার অধীনস্থ প্রায় ৪০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে, তাদেরকে জনসেবা নিশ্চিত করতে যে পদক্ষেপগুলো নেয়া দরকার সেগুলো যথাসময়ে নিয়েছি। পুরস্কার প্রাপ্তি প্রসঙ্গে বলতে গেলে, একই বছরে দুটি পুরস্কার যা নি:সন্দেহে অনুপ্রেরণা, আনন্দ সীমাহীন। এ পুরস্কার প্রাপ্তি জনগণের প্রতি সেবা প্রদানের জন্য আমাকে উৎসাহিত করবে। ভবিষ্যতে আরও জনমুখী সেবা নিশ্চিত করার আগ্রহ তৈরি হয়েছে তো বটেই। অফিস শতভাগ দুনীতি মুক্ত করতে পেরেছেন কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার নজরে জনসেবা সংক্রান্তে কোন দুর্নীতি কিংবা হয়রানীর অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথেই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। সেবাগ্রহিতারা সরাসরি আমার সাথে কথা বলতে পেরেছে, অফিসের দরজা সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত ছিলো।