রোববার সকালে যশোর রোডের ঝুঁকিপূর্ণ গাছ অপসারণের দাবীতে গদখালীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সকালের এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছে ঝিকরগাছার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন "সেবা", যশোরের নাগরিক অধিকার আন্দোলন এবং ফুলের রাজধানী খ্যাত গদখালীর ফুল চাষী ও ব্যবসায়ী সংগঠন।
মানববন্ধনে প্রায় সহ¯্রাধিক মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ গাছগুলো অপসারণের দাবী জানিয়েছেন। সেবা সংগঠনের সভাপতি মাস্টার আশরাফুজ্জামান বাবুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ও ভারত চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মতিয়ার রহমান, নাগরিক অধিকার আন্দোলন যশোরের সভাপতি নূর জালাল, নাগরিক অধিকার আন্দোলনের সমন্বয়ক মাসুদুজ্জামান মিঠু, বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আবদুর রহিম, আহসান উল্লাহ, বাবরজান বরুণ, আলমগীর হোসেন, উজ্জ্বল হোসেন প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ বলেন -পদ্মা সেতুর কারণে দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলে আমদানি রপ্তানির সুফল পাইতে শুরু করেছে। পরিপূর্ণ মাত্রায় সুফল পাইতে হলে অবিলম্বে যশোর রোডের ( যশোর -বেলাপোল) মৃতপ্রায় গাছগুলো অপসারণের ব্যবস্থা করে ৬ লেনের রাস্তা করতে হবে। অন্যথায় সড়ক অবরোধ সহ কঠিন কর্মসূচির মাধ্যমে দাবি আদায় করা হবে। আমরা সরকারের সহযোগিতা আশা করছি।
যশোর (যশোর-বেনাপোল) রোডের ঝিকরগাছা অংশে শতবর্ষী ও নতুন রোপণ করা অন্তত ৩০টি রেইনট্রি মৃতপ্রায়। এর মধ্যে ঝিকরগাছা উপজেলা মোড়ে চারটি, ঝিকরগাছা বাসস্ট্যান্ডে চারটি, পারবাজারে চারটি, ঝিকরগাছা মহিলা কলেজ মোড়ে তিনটি, বেনেয়ালি বালিখোলায় তিনটি, দেশের বৃহৎ ফুলের বাজার গদখালীতে পাঁচটি, নবীবনগরে একটি, চারাতলায় দুটি, কলাগাছিতে দুটি, নাভারণ পুরাতন বাজারে সড়কের পাশে তিনটি গাছ মরে গেছে। এসব মৃত গাছ ছাড়াও ডালপালাবিহীন অন্তত ২০টি মরা শুকনা গাছ দাঁড়িয়ে আছে।
যশোর জেলা পরিষদ সূত্র জানায়, যশোর রোডের দুই পাশে বিভিন্ন প্রজাতির ১৭৩৭টি গাছ আছে। এসব গাছের মধ্যে শতবর্ষী পুরাতন রেইনট্রির সংখ্যা ৭৪৫টি, নতুন রেইনট্রি ৬৮টি, মেহগনি ৫৮৮টি, বট ১৭টি, শিশু ১৫টি, ঝাউ দুটি, আম পাঁচটি, কাঁঠাল ২৫৭টি, বাবলা ১৩টি, দেবদারু ১৬টি, শিমুল একটি ও সেগুন ১০টি। যশোর রোডের দুই পাশের গাছগুলোর মালিকানা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
গত ৩০ মে গাছগুলো অপসারণের জন্য ঝিকরগাছা ও শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার যথাক্রমে মাহবুবুল ইসলাম ও নারায়ণ চন্দ্র পাল জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান ও সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বরাবর চিঠি দিয়েছিলেন।
অদ্যাবধি ঝুঁকিপূর্ণ গাছ অপসারণ না হওয়ায় সেবা সংগঠন, নাগরিক অধিকার আন্দোলন, মানবাধিকার সংগঠন, গদখালী ফুল চাষী এবং ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।
১৮৪৫ সালে সড়কটি নির্মাণের সময় ভারতের তৎকালীন গভর্নর অকল্যান্ড সহযোগিতা করেন। তখন সড়কের পাশে বিশ্রাম নেওয়ার উদ্দেশে প্রচুর শিশুগাছ লাগানো হয়। সেই গাছই আজ শতবর্ষী গাছের তকমা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।