সমিতির নামে প্রশাসনের ছত্রছায়ায় চলছে জমজমাট দাদন ব্যবসা। এতে সর্বশান্ত হচ্ছে নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো। এমন কার্যক্রম চলছে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলায় সমবায় দপ্তর হতে নিবন্ধন নেওয়া ফার্জ নামে একটি সমিতির।
এলাকাবাসী ও বিভিন্ন সূত্র জানায়,এলাকার কয়েকজন দাদন ব্যবসায়ীর নিরাপদ আশ্রয়স্থল এটি। সমিতির আড়ালে এখানে চলে চড়া সুদের দাদন ব্যবসা। দিনের বেলা বন্ধ থাকলেও অফিসটি রাতে সরব থাকে। তারা কৃষি প্রকল্প,মৎস্য প্রকল্প,খামার প্রকল্প,ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্প,দর্জি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম,ফার্জ বেকারী কার্যক্রম,মাচা পদ্ধতিতে ছাগল পালন ও সহজ কিস্তিতে পণ্য বিক্রয় কার্যক্রম থাকলেও তা শুধু ব্যনারেই সীমাবদ্ধ। বাস্তবে আছে শুধু চড়া সুদের ব্যবসা। যা দৈনিক ভাবে আদায় চলমান। এছাড়াও সাধারন মানুষের কাছে ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে তারা উচ্চ সুদে ঋণ দেওয়ার কার্যক্রম চালাচ্ছেন। আর এতে উন্নয়ন তো দুরের কথা বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ সর্বশান্ত হচ্ছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন সদস্য জানান, স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে চলছে ফার্জ সভাপতি জয়ন্ত গংদের অভিনব সুদের কারবার। জয়ন্ত একজন দলিল লেখক। অপরদিকে জয়ন্ত স্বয়ং একজন জালিয়ত চক্রের হোতা। তার বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ এনে গত বছর ২০২১ইং সালে সহকারী কমিশনার(ভূমি) সিফাত মোহাম্মদ ইশতিয়াক ভূইয়ার নির্দেশে ধর্মপাল ইউনিয়ন উপ সহকারী ভূমি কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে জলঢাকা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যা অদ্যাবধি আদালতে বিচারাধীন।এছাড়া কোন সদস্য এমন চড়া সুদ নিয়ে প্রতিবাদ করলে তাকে ঋণ দেওয়া তো দুরের কথা বরং তার সদস্য পদ পর্যন্ত বাতিল করা হয়। এসব শোষনকারীদের দেখার কেউ নেই। উল্টো স্থানীয় সমবায় দপ্তর তাদের পক্ষে সাফাই গায়।
সমিতির ম্যানেজার নিহারঞ্জন রায় বলেন, আমি সম্প্রতি এখানে ঢুকেছি। জামানত বাবদ কুড়ি হাজার টাকা দিয়েছি। আমাদের কর্মকাণ্ড কি সবই তো আপনারা শুনেছেন।
ফার্জ সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি বাবু জয়ন্ত রায়(সরকার)বলেন, আগে আমাদের নিবন্ধন ছিলনা। এখন সমবায় দপ্তর হতে নিবন্ধন নং-১৭ তারিখ ২৬/১০/২০২১ইং নিয়ে ব্যবসা করছি। স্থানীয় প্রশাসন আমাদের সকল কর্মকাণ্ড অবগত আছেন।
সমবায়ের নিবন্ধন নিয়ে দাদন ব্যবসা সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা সমবায় অফিসার লুবনা আক্তার বলেন, ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে সমবায় সমিতি গুলোর টাকা দেওয়ার নিয়ম আছে।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুব হাসান বলেন, এমন অনিয়ম আমি অবগত নই। তবে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নিবো।