ভালনেরেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট (ভিজিডি) খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর কার্ড বিতরনে তুঘলকী কান্ড ঘটানো হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার-চেয়ারম্যানরা মিলে এ কান্ড ঘটিয়েছেন। ১৮ মাস পর তাদের নামে কার্ড হয়েছে এখন জানতে পেরেছেন। ভুক্তভোগী মহিলারা মঙ্গলবার সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার চরের কাজলা ইউনিয়ন পরিষদে। স্ব-শরীরে হাজির হয়ে গরীব-অসহায় মহিলাদের অভিযোগ দায়েরের পর ঘটনাটি নিয়ে সরকারি মহলে তোলপাড় শুরু হয়েছে। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া সারিয়াকান্দি উপজেলার কাজলা ইউনিয়নে গত ২০২১ইং সালে দেওয়া হয়েছে ২২২ জন গরীব-দুস্থ মহিলাকে মহিলাকে ভিজিডি কার্ড দেয়া হয়েছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রালয়ের খাদ্য কর্মসূচীর সমাজের দরিদ্র অসহায় ব্যক্তিরা পাচ্ছেন প্রতি মাসে ৩০ কেজি ওজনের এক বস্তা চাল। কিন্তু উপকারভোগীদের নামের তালিকা তৈরি করতেই দুর্নীতি করা হয়েছে। গরীবদের নামে কার্ড দেয়া হয়েছে ঠিকই ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বারদের যোগসাজসে ওই কার্ডগুলো কার্ডধারীদের না জানিয়ে তাদের হাতে রাখা হয়েছে। মাস এলেই তাদের নামের কার্ডের চাল তুলে নিয়ে বাজারে বিক্রি করে থাকেন চেয়ারম্যান-মেম্বাররা।
কাজলা ইউনিয়নের ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের সদস্যরা ৫/৬ দিন পূর্বে ঘটনাটি জানতে পেরেছেন এবং মঙ্গলবার সকাল ১১টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর অেিভাযগ দায়ের করেছন। অভিযোগে স্বাক্ষর করেছেন ৫ জন অসহায় মহিল এবং টিপসহি দিয়েছেন একজন। গোলাপি বেগম, আরজিনা বেগম, মোরশেদা বেগম বলেন, আমাদের নামে ভিজিডি কার্ড হয়েছে ঠিকই চালও উত্তোলন হয়েছে মাস মাস, কিন্তুু আমরা তা ঘুর্ণাক্ষরে জানতে পারিনি। জানা মতে আমদের ইউনিয়নে ৩০/৩৫ জন মহিলার ভাগ্যে এমন ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত করলেই তা বেরিয়ে পড়বে। ১৮ মাস আগে আমাদের নামে কার্ড হয়েছে, ৫/৬ দিন পূর্বে কোন এক মারফত ঘটনাটি জানতে পেরে প্রথমে আমরা হতবাক হয়েছিলাম। মনে হয়েছিলো কথাটা সত্য না। খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পেরে আমরা বিষয়টি ইউএনও সাহেবকে জানিয়েছি। এ ব্যাপারে কাজলা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো: রুবেল বলেন, তালিকা আমরা করি না। চেয়ারম্যান মেম্বার সাহেবরা করে থাকেন। তাদের দেওয়া তালিকা মোতাবেক আমরা দিয়ে মালামাল কার্ড ধারীদের হাতে দেই মাত্র। ট্যাগ অফিসার ও উপজেলা যুব উন্নয়নের সহকারী অফিসার মো: ছরোয়ার আলম বলেন, তালিকা অনুযায়ী চাল দেওয়া হয়ে থাকে কার্ড ধারীদের। পুুরুষ বা শিশু কিশোর কোন বাধা হয়ে দাড়ায় না। ভৌগলিক কারণে (চরের কারনে) যার হাতে কার্ড থাকে তাকেই চাল দেওয়া হয়ে থাকে। এ ব্যাপারে কাজলা ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছি প্রায় ৪ মাস। আমার পূর্বেকার চেয়ারম্যান মেম্বাররা ওই তালিকা তৈরি করার সময় হয়ত ঘটনাটি ঘটেছে। কোন কার্ড ধারীর নাম বাদ পলে আমার দোষ হবে ভেবে, আমি তালিকায় হাত দেইনি। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোছা: লায়লা পারভিন নাহার বলেন, এছাড়াও একাধিক ব্যাক্তির নামে বিভিন্ন সুযোগসুবিধার কার্ড থাকতে পারে বলে আমার মনে হয়। তবে অভিযোগটি পাওয়ার পরপরই কাজলা ইউনিয়নের সচিব ও ট্যাগ অফিসারকে দ্রুত খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহি অফিসার মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, মহিলাদের অভিযোগ পাওয়ার পরপরই আমি তাদের সাথে কথা বলেছি এবং তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে।