আর মাত্র কয়েকদিন পরেই মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা। ধর্মীয় ঐতিহ্য ও ভাব-গাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে আগামী ১০ জুলাই ঈদুল আযহা উপলক্ষে পশু কোরবানি করবেন মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মপ্রান মানুষ। আর এই কুরবানি ঈদকে সামনে রেখে গজারিয়ায় জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট।
মঙ্গলবার উপজেলার ভবেরচর ওয়াজীর আলী বহু মুখী উচ্চবিদ্যালয়ের খেলার মাঠে ও রসুলপুর বাজারে এ পশুর হাট বসে। হাট গুলোতে সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গরু আসতে শুরু করে। কিন্তু এবার কুরবানি ঈদকে সামনে রেখে হাট গুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেলেও বিক্রি সেভাবে হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন গরুর খামারী ও ব্যবসায়িরা।
গত বছরের তুলনায় এবার সব ধরনের পশুর দাম বেশি হওয়ায় হাটে পর্যাপ্ত সংখ্যাক পশু থাকলেও বিক্রি তুলনামূলক ভাবে বেশ কম। দাম বেশি হওয়ায় মধ্যবিত্তরা এবার ঝুঁকছেন ছোট বা মাঝারি সাইজের পশু ক্রয়ের দিকে। যে কারণে এবারের কোরবানি ঈদে লাখ টাকা বাজেটের মধ্যে গরুর চাহিদা একটু কম। তবে পশু হাট গুলোতে মাঝারি সাইজের গুরু ও ছাগলের চাহিদা তুলনামূলক বেশি। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি আর্থিক সংকটের কারণে সাধ্যের মধ্যে না থাকায় সাধারণ ক্রেতারা এবার বড় গরু কিনতে বেশী আগ্রহী নয়।
খামারীরা বলেন, গো-খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও বছর জুড়ে গরু পালন এবং পরিচর্চায় খরচ বেশি হওয়া সত্বেও কাঙ্খিত দামের চেয়ে অপেক্ষাকৃত কম দামে গরু বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের। ফলে গরু বিক্রি করে তেমন লাভ হচ্ছে না বলে জানান খামারীরা। ক্রেতা আছে কিন্তু তারা গরু কিনছে না। দাম শোনে চলে যায়।
নয়াকান্দি গ্রামের রাজা মিয়া ও আনারপুরা গ্রামের উজ্জ্বল মিয়া জানান, তারা কোরবানির জন্য দেশি জাতের মাঝারি গরু কিনতে এসেছেন। কিন্তু বড় গরুর তুলনায় এ ধরনের গরুর দাম বেশি। তাই তাদের মতো অনেক ক্রেতাই ফিরে যাচ্ছেন। আগামী দিন উপজেলার অন্য কোনো হাটে যাবেন।
এদিকে হাটের ইজারাদার জানিয়েছেন, হাটের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ক্রেতা ও বিক্রেতারা যাতে প্রতারিত না হন সে জন্য মাইকে প্রচারণা চালানো হয়।
গজারিয়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আসাদুল ইসলাম জানান, এবার উপজেলায় কোরবানির পশুর সম্ভাব্য চাহিদা ধরা হয়েছে ৭হাজার ১৫০টি। আর কোরবানির জন্য মোট পশু মজুত রয়েছে ৭হাজার ৫১০টি। যা চাহিদার চেয়ে ৩৬০টি পশু বেশি। উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ২৫টি খামারসহ পারিবারিক ভাবে এসব পশু লালন পালন করা হয়েছে। এর মধ্যে গরু ৫ হাজার ৭৫০টি, ছাগল ১হাজার ৬৫০টি, ভেড়া ৯৫টি ও মহিষ রয়েছে ১৫টি। কুরবানির জন্য স্বাস্থ্য সম্মত ভাবে এস পশু প্রস্তুত করেছেন খামারীরা।