জেলার মুলাদী উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের আড়িয়াল খাঁ নদের ওপর প্রায় ৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মিত হয়েছে ২০১৯ সালে। কিন্তু এখনো সংযোগ সড়ক নির্মান না হওয়ায় সেতু দিয়ে যানবাহনতো দূরের কথা জনসাধারণই চলাচল করতে পারছেন না। ফলে নির্মিত সেতুটি কোনো কাজেই আসছে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আড়িয়াল খাঁ নদীর কারণে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের বাটাজোর এলাকা থেকে মুলাদী উপজেলা হয়ে হিজলা, মেহেন্দিগঞ্জ ও কাজিরহাট থানার সাথে সড়ক যোগাযোগে দীর্ঘদিনের প্রতিবন্ধকতা ছিলো। এ বিড়ম্বনা থেকে রক্ষা পেতে ২০১৪ সালে ১১২টি পাইলের ওপর ‘প্রি-স্টেসড কংক্রিট গার্ডার’ দিয়ে প্রায় আধা কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সেতুটি হয়ে মুলাদীর নাজিরপুরের সাথে মোল্লারহাট ও কুতুবপুরেরও সংযোগ সড়ক রয়েছে। ৪৩২ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৯.৮২ মিটার প্রস্থ সেতুটিতে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে ৭.৩০ মিটার বা ২৪ ফুট। আটটি ১১২ মিটার ডায়ামিটার ও ৪৮ মিটার লম্বা কাস্ট ইন সিটু পাইলের এ সেতুটিতে পিয়ার রয়েছে ১২টি। ১১.২৯১ মিটার উচ্চতার এবাটমেন্টের পাঁচটি স্প্যানের এ সেতুটি নির্মাণে প্রায় সাড়ে পাঁচ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট দফতর সূত্রে জানা গেছে, মুলাদী উপজেলার সাথে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগ দ্রুত ও উন্নত করার লক্ষে উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের রামারপোল এলাকার আড়িয়াল খাঁ নদীর ওপর ২০১৪ সালে সেতু নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে তত্ত্বাবধায়নে সরকারের ‘সাউথ-ওয়েস্টার্ন রুরাল ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট’র আওতায় প্রজেক্ট বিল্ডার্স লিমিটেড প্রায় ৬৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে মূল সেতুর কাজ সম্পন্ন করেছে ২০১৯ সালে। এমএসটি-এমডিই-জেভি নামের অপর একটি প্রতিষ্ঠানের ৩.৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ করার কথা থাকলেও সেতু নির্মানের তিন বছরের মধ্যেও সংযোগ সড়ক নির্মিত হয়নি। ফলে নির্মিত সেতু দিয়ে যানবাহনতো দূরের কথা জনসাধারণই চলাচল করতে পারছেন না।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সেতু নির্মাণের পর নদী পারাপারের খেয়া বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ফলে তাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। নাজিরপুর ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বাদল খান বলেন, সেতুটির সংযোগ সড়ক না হওয়ায় মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। ইতোমধ্যে সেতুটি নদী ভাঙনে হুমকির মুখে পরেছে। তিনি আরও বলেন, সংযোগ সড়ক না থাকায় নির্মিত সেতুটি স্থানীয়দের কোনো কাজেই আসছে না।
এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী তানজিলুর রহমান বলেন, সেতু নির্মাণের পরে কারিগরি সমস্যার কারণে সংযোগ সড়কে বালু দিয়ে রাখা যাচ্ছিলো না। পরে সেতুর পূর্বপ্রান্তে নদী ভাঙন দেখা দেয়। সেতুটি রক্ষার জন্য ওইপ্রান্তে একটি স্প্যান বাড়াতে হবে। পরে সংযোগ সড়কের কাজ করা হবে।
এলজিইডির বরিশাল জেলা নির্বাহী প্রকৌশল অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সেতুর স্প্যান বাড়ানো এবং সংযোগ সড়কের নকশা চূড়ান্ত করে অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে দ্রুত সেতুর স্প্যান বৃদ্ধি ও সংযোগ সড়কের কাজ শুরু করা হবে।