পদ্মা সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হওয়ার পর থেকে যাত্রী সংকটে পরতে হয়েছে ঢাকা-বরিশাল নৌরুটের বিলাসবহুল লঞ্চগুলোকে। ঈদ-উল আযহার সময় এর প্রভাব চরমভাবে পরার আশঙ্কাছিলো লঞ্চ মালিকদের।
অবশেষে সেই শঙ্কা কাটিয়ে ঈদ স্পেশাল সার্ভিসসহ ১৪টি লঞ্চ শুক্রবার ভোরে ও তিনটি লঞ্চ দুপুরে বরিশাল নৌ-বন্দরে এসে পৌঁছেছে। প্রতিটি লঞ্চে ছিলো ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। যাত্রীরা জানিয়েছেন, প্রতিটি লঞ্চের কেবিন ও ছোফা, ছাদে, কেবিনের করিডোর, বেলকুনি, প্রথম ও দ্বিতীয় তলার ডেকসহ সবস্থানে যাত্রী ছিলো। ভোরে সবগুলো লঞ্চ নদীবন্দরে এসে পৌঁছানোর পর পরই যাত্রীতে পূর্ণ হয়ে যায় নদীবন্দর।
বিলাসবহুল সুরভী-৭ লঞ্চের যাত্রী কামাল পারভেজ বলেন, লঞ্চের ছাদেও অনেক যাত্রী ছিল। কুয়াকাটা-২ লঞ্চের যাত্রী জহির খান বলেন, আমার মনে হয় ধারণক্ষমতার তিনগুণ বেশি যাত্রী নিয়ে লঞ্চটি এসেছে। অনেক যাত্রী বসার জায়গায়ও পায়নি। সিঁড়িতেও দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। এ্যাডভেঞ্জার-১ লঞ্চের যাত্রী মমতাজ বেগম বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর লঞ্চগুলোতে কম ভাড়ায় কয়েকদিন যাত্রী এনেছিল। এখন আবার সেই আগের ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। ডেকে ৩৫০ টাকা করে ভাড়া নেওয়া হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। সুন্দরবন-১১ লঞ্চের যাত্রী মোছাদ্দেক হাওলাদার বলেন, সুন্দরবন ছাড়াও প্রায় সবগুলো লঞ্চের যাত্রী ছিলো আগের ঈদের মতোই। ছাদও ছিল পরিপূর্ণ। ডাবল কেবিন ২৪শ’, সিঙ্গেল ১৪শ’ টাকা করে ভাড়া নিয়েছে। আর ডেকেও আগের ভাড়া ৩৫০ টাকা। তারপরেও যাত্রীদের বেশ চাঁপ ছিলো।
বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার পরিদর্শক কবির হোসেন বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তায় সবধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ঈদ স্পেশাল সার্ভিসের প্রথমদিন (শুক্রবার) ভোরে সরাসরি রুটের ১০টি এবং ভায়া রুটের চারটি লঞ্চে যাত্রী পরিপূর্ণ হয়ে এসেছে। একইদিন দুপুরে আরো তিনটি লঞ্চ ঢাকার সদরঘাট থেকে ঘরমুখী বরিশালের যাত্রীদের নিয়ে এসেছেন।
সুন্দরবন নেভিগেশনের পরিচালক আকিদুল ইসলাম আকেদ বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর যেভাবে যাত্রী হ্রাস পেয়েছিলো, তাতে ঈদে যাত্রী নিয়ে শঙ্কা ছিলো। কিন্তু এখন দেখছি প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি যাত্রী লঞ্চে এসেছে। তবে এবার ঈদ স্পেশাল সার্ভিসে লঞ্চের সংখ্যা কম বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
নিজাম শিপিংয়ের ব্যবস্থাপক হুমায়ুন কবির বলেন, সদ্য পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পরে লঞ্চে এত পরিমাণ যাত্রী হবে তা কারো ধারণা ছিলোনা। তবে ধারণা ছাপিয়ে লঞ্চে যাত্রী হওয়ায় মনে হচ্ছে নৌ-পথের যাত্রাকেই নিরাপদ মনে করেছে ঈদে দক্ষিণাঞ্চলের ঘরমুখো মানুষগুলো। তিনি আরও বলেন, শুক্রবার দুপুরে আরও তিনটি লঞ্চ যাত্রী নিয়ে বরিশালে এসে পৌঁছেছে।