মরে পড়ে থাকলেও কিস্তির টাকা দিতেই হবে। এক বছর আগে এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে একটি ইজিবাইক কিনেছিল নিমাই দাস। সপ্তাহ খানেক আগে সেটি চুরি হয়ে গেছে। আয়ের একমাত্র অবলম্বন ইজিবাইকটি হারিয়ে এখন সে কর্মহীন। তার পরিবারের লোকজন অনাহারে অর্ধাহারে। এরমধ্যে আবার দিতে হবে ঋনের কিস্তির টাকা। কিন্তু টাকার জোগাড় হয়নি। মঙ্গলবার ওই কিস্তির টাকা নিতে আসলে মেয়ে চম্পা দাস বাবার দূর্দশার কথা বলতেই উপর্যুক্ত কথা শোনালেন আশা এনজিওর কিস্তি আদায়কারী সিনিয়র লোন অফিসার জিয়াউর রহমান।
গত রোববার দিবাগত রাতে নিমাই দাসসহ কালীগঞ্জ পৌরসভার আড়পাড়া গ্রামের দরিদ্র শুশান্ত চক্রবর্তী ও জিল্লুর রহমান নামে দু’জনের আরো দুইটি ইজিবাইক চুরি গেছে। এনজিও ঋনের কিস্তির জালে তাদের পরিবারেও চলছে একই অবস্থা।তাদের মধ্যে কালীগঞ্জ শহরের ফয়লা মাষ্টার পাড়ার বাসিন্দা ইজিবাইক চালক নিমাই দাস জানান, ইজিবাইকটিই ছিল তার পরিবারের আয়ের একমাত্র অবলম্বন। গত বছরে আশা এনজিও থেকে ৭০ হাজার ঋণ তুলে ইজিবাইকটি কিনে নিজেই চালাতেন। এখন সেটি চুরি হয়ে যাওয়ায় রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। এনজিওর ঋনের কিস্তি শোধ করা তো দুরের কথা পরিবারে সদস্যদের ঠিকমতো তিন বেলা খাবারও জুটছে না। মা, স্ত্রী ও সন্তানসহ ৬ সদস্যের সংসারে হাহাকার নেমে এসেছে। তিনি আরো জানান, মাত্র আড়াই শতক ভিটে বাড়ি ছাড়া আর কোন জমাজমি নেই। এনজিওর কিস্তি দিতে না পারায় মেয়ে চম্পাকে বাজে কথাও শুনতে হয়েছে।
নিমাই দাস আরো জানান, এনজিওর কিস্তি পরিশোধে কিছু সময় দেবার জন্য তিনি কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া জেরিন বরাবর একটি আবেদন করেছেন। এখন কি করেই বা কিস্তির টাকা পরিশোধ করবেন সারাক্ষন সে চিন্তায় ব্যাস্ত।
তবে কালীগঞ্জ আশা এনজিওর সিনিয়র লোন অফিসার জিয়াউর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আর্থিক লেনদেন ভিন্ন জিনিস হলেও মানবিক বিষয়টি কেউ এড়িয়ে যেতে পারি না। আমি কিস্তি নিতে বাড়িতে গিয়ে শুনি নিমাই দাসের ইজিবাইকটি চুরি গেছে, অভাবী পরিবার বলেই আমি বলেছি অফিসে গিয়ে ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলতে। এর চেয়ে সেখানে বেশি কিছু হয়নি।