আজ ২৯ আষাঢ়। ষড় ঋতুর বাংলাদেশে প্রাকৃতিক নিয়মে এ সময় বাংলার মাঠ-ঘাট বৃষ্টির পানিতে টইটুম্বর থাকার কথা। কৃষকের ব্যস্ত সময় পার করার কথা আমান ধান চাষের জন্য জমি তৈরীর কাজে। সাধারণত বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাস থেকেই নওগাঁ জেলাসহ উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে বৃষ্টিপাত শুরু হলেও চলতি মৌসুমে এর ব্যতয় পরিলক্ষিত হচ্ছে। দীর্ঘ সময় বৃষ্টিপাত না হওয়ায় শেষ আষাঢ়েও খাঁ খাঁ করছে ফসলি মাঠ। আর মাঠে পানি না থাকায় মাঠে মাঠে চরছে গরু ছাগল। বেশী লাভের আশায় যে সকল কৃষক বর্ষালি বোরো ধান রোপন করেছেন তাঁরা শ্যালো মেশিন বসিয়ে জমিতে সেচ দিয়ে ফসল রক্ষার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
মঙ্গলবার সকালে উপজেলার পদ্মপুকুর, কাঞ্চন, ফহিমপুর, পাবর্তীপুরসহ বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, শুকনো মাঠে চড়ে বেড়াচ্ছে গরু ও ছাগলের দল। রাখালরা মাঠে গরু ছেড়ে দিয়ে খোঁশ গল্পে মেতে উঠেছে। গরু চরানোর সময় কথা হয় ফহিমপুর গ্রামের কৃষক সাদেকের সাথে। তিনি বলেন, অন্যান্য বছর এ সময় মাঠে গরু চরানোর কোন সুযোগ থাকে না। গরু-ছাগল বাড়িতে রেখে খড় ও গাছের পাতা কেটে খাওয়ানো হয়। যেহেতু মাঠে পানি নেই তাই তাঁরা গরু-ছাগল মাঠে ছেড়ে দিয়ে ঘাস খাওয়াচ্ছেন। বর্ষালি বোরোর জমিতে শ্যালো মেশিন দিয়ে সেচ দেওয়ার সময় কথা হয় পদ্মপুকুর গ্রামের কৃষক সোহেল রানার সাথে। তিনি বলেন, বর্ষালি বোরো ধানে সাধারণত সেচের প্রয়োজন হয়না। কিন্তু এ বছর বৃষ্টি না হওয়ায় জমিতে সেচ দিতে বাধ্য হচ্ছি। সেচ না দিলে তীব্র রোদে ধান ক্ষেত পুড়ে যাবে বলেও জানান এই কৃষক।
এদিকে দীর্ঘ সময় প্রাকৃতিক বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পত্নীতলাসহ আশেপাশের উপজেলায় গত প্রায় একমাস ধরে প্রচন্ড গরম অনুভুত হচ্চে। তীব্র খরতাপ আর গরম বাতাসে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে মানুষ। এর মাঝে ঘন ঘন বিদ্যুতের লোড শেডিং মানুষের দুর্দশাকে বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুণ। তীব্র গরমের কাছে পরাজিত হয়ে একটু শান্তির আশায় মানুষ রাতে ঘুমানোর জন্য খোলা স্থান বা বাড়ির ছাদে বিছানা পাততে বাধ্য হচ্ছে। প্রচন্ড তাপদাহের কারণে ব্যহত হচ্ছে মানুষের স্বাভাবিক কাজকর্ম।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার প্রকাশ চন্দ্র সরকার জানান, জমিতে সেচ দেওয়ার কারণে কৃষকের উৎপাদন খরচ বাড়বে। যার প্রভাব পড়তে পারে বাজারের উপর। সময়মতো বৃষ্টিপাত না হওয়ায় আমন চাষ বিলম্বিত হতে পারে। যার প্রভাব পড়তে পারে সার্বিক উৎপাদনের উপর।