রাজা ও নেই রাজ্য ও নেই। তবুও নিরব সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে রাজবাড়ীটি। আর সুবিধাবাদিরা এই নিরবতার সুযোগ নিচ্ছে বারবার। কিশোরগঞ্জ নিকলী উপজেলায় শেষ স্মৃতি চিহ্ন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে দয়াল কুটির। ১৩৪০ সালে ভারতীয় কারিগরের হাতে নির্মিত এই রাজবাড়ীর পুরোটা জুড়ে রয়েছে সিরামিকের কারুকাজ। গোড়া চাঁদ শাহের ছেলে রাজা দয়াল শাহ এই বাড়ীর রাজা ছিলেন। দয়াল শাহার নামে নাম করণ করা হয় এই রাজবাড়ী। রাজ্য নেই, রাজবাড়ী কেন? রাজার পত্তন হতে না হতেই উত্তরাধিকারিদের মধ্যে দ্বন্ধ বেধে যায়। রাজবাড়ী রক্ষা না, রাজবাড়ী দখলের। বাড়ীর দেওয়ালে আগাছা গাছে পরিনত হয়েছে। কিন্তু রাজ পরিবরের উত্তরাধিকারিরা ব্যর্থ হয়েছে রাজার সুনাম গৌরব ধরে রাখতে। আপন করে নিতে পারেনি তাদের ঐতিহ্য। সৃষ্টি হয়েছে এক বিকৃত ইতিহাস। রাজবাড়ী নিয়ে চলছে মনোমালিন। আর এর প্রভাব পড়েছে রাজবাড়ীর উপর। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় রাজবাড়ীটি দখল করে মুক্তিবাহিনীরা। এই বাড়ীর মন্দির ব্যবহার করা হয়েছে জেলখানা হিসেবে। মুক্তিবাহিনীরা জেল খানায় রাজাকারদের ধরে এনে বন্দি করে রাখতো। রাজ পরিবারের লোকজন পাকবাহিনীর ভয়ে ভারতে সরনার্থী শিবিরে চলে যায়। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর বাড়ীটি নিজেদের দখলে আছে। কিন্তু দ্বন্ধ তাদের থেকেই গেছে শেষ চার ওয়ারিশানদের মধ্যে একজন তার অংশ বিক্রি করে দিয়েছে। সেই অংশ নিয়ে চলছে মামলা। শুধু কি বাড়ীর লোকজনদের কুনজর। পাড়া প্রতিবেশির রয়েছে নানা জল্পনা কল্পনা। গোড়াচাঁদ শাহর স্ত্রীর স্মৃতির মঠ রয়েছে মঠের চারদিকে দেওয়া রয়েছে পিতলের ত্রিশূল। পাড়া প্রতিবেশির ধারনা এই ত্রিশূল যার কাছে থাকবে সে হবে অদৃশ্য শক্তির অধিকারি। যেই বলা সেই কাজ। একদিন রাতে পল্লি উন্নয়নের অফিস থেকে মই নিয়ে এসে চুরি ত্রিশূল। রেখে যায় মই। রাজবাড়ীতে রয়েছে নাটকিয় ভাবে ডাকাতি করার ঘটনা। কোন ভয় ভীতি দেখিয়ে নয়। চিঠি দিয়ে ডাকাতরা ডাকাতি করতে আসতো। চিঠিতে ডাকাতে দিন তারিখ লিখে দিয়ে পাঠাতো। ডাকাতরা এসে থলি ভর্তি টাকা নিয়ে যেত।