কোনোভাবেই সড়কে শৃঙ্খলা ফিরে আসছে না। সড়কে নৈরাজ্য বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে দেশে যাতায়াতজনিত দুর্ঘটনা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিনই দেশের কোনো না কোনো অঞ্চলে দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যাচ্ছে। বিশেষ করে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর বিভীষিকা থেকে কিছুতেই যেন রক্ষা নেই এ দেশের মানুষের। গত জুন মাসে দেশে ৪৬৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫২৪ জন নিহত হয়েছেন। এসব দুর্ঘটনায় আহত আরও ৮২১ জন। এর আগে মে মাসে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫২৮টি। এতে নিহত হয়েছেন ৬৪১ জন এবং আহত হয়েছেন ১৩৬৪ জন। ভয়াবহ এ দুর্ঘটনাগুলো কেন হচ্ছে কারা এর জন্য দায়ী তা শনাক্ত করে দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মনোযোগ ও তৎপরতা চোখে পড়ছে না। দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করার কারণেই এর পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণেই এ দেশের মানুষ আপনজন হারিয়ে চোখের পানি ঝরাচ্ছে আর নিঃস্ব হচ্ছে অসংখ্য পরিবার। অথচ কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কার্যকর উদ্যোগ নিলে দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব। তুচ্ছ কারণে সড়কে যাত্রীর প্রাণ যাবে, তাকে বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হবে, এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী মূলত অবৈধ চালক ও চালকের সহযোগী। তাদের অসতর্কতা, অসুস্থ প্রতিযোগিতা ও খামখেয়ালিপনা, ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও সড়ক-মহাসড়কের ভঙ্গুর অবস্থা। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে সরকার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে কিন্তু তেমন ইতিবাচক ফল পাওয়া যাচ্ছে না। বাসচালক ও চালকের সহকারীদের খামখেয়ালির কারণে নিরীহ ছাত্রছাত্রীসহ যাত্রীরা প্রাণ হারাচ্ছেন। তাদের কবল থেকে কেউই রেহাই পাচ্ছেন না। গত ১৫ বছরে সড়ক পথে ৫৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ৭০ হাজার মামলাও হয়েছে বিভিন্ন দুর্ঘটনায়। মনে রাখতে হবে, এই দুর্ঘটনা থেকে যদি আমরা শিক্ষা নিতে না পারি তবে ভবিষ্যতেও এর পুনরাবৃত্তি ঘটবেই। প্রতি বছর ঈদ যাত্রায় বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রাণহানি ঘটে। এবারের ঈদে তার পরিসংখ্যান এখনও পাওয়া যায়নি। এবছর ঈদুল ফিতরের আগে মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ রাখা হয়। এই বাহনটির দুর্ঘটনায় অধিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এ বছর আশা করা যায় অন্যান্য বারের তুলনায় এই প্রাণহানি কম হবে। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে পরিকল্পিত পদক্ষেপ পারে হতাহতের ঘটনা কমাতে।