গোয়ালন্দে শুভেচ্ছা ফেস্টুন লাগানোর বিরোধের জেরে গোয়ালন্দ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবির হোসেন রিদয় ও পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি রাতুল আহমেদ গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।
এ ঘটনায় গোয়ালন্দ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবির হোসেন রিদয় বাদী হয়ে পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি রাতুল আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক আকাশ সাহাসহ ৭জনের বিরুদ্ধে অফিস ভাঙচুরের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন।
এছাড়া বুধবার মামলার বাদী উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন ও বিবাদী পক্ষ গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি আহবান করে। এতে উত্তেজনা আরো বেড়ে যাওয়ায় তাৎক্ষনিকভাবে আগামী তিন দিনের মধ্যে ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাসে উপজেলা আওয়ামী লীগের হস্তক্ষেপে উভয় গ্রুপ তাদের কর্মসূচি থেকে সরে আসে।
গোয়ালন্দ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও মামলার বাদী আবির হোসেন রিদয় বলেন,ঈদের শুভেচ্ছা ফেস্টুন লাগানোর বিরোধের জেরে গত ৯জুলাই রাতে গোয়ালন্দ পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি মো. রাতুল আহমেদের নেতৃত্বে, সাধারণ সম্পাদক আকাশ কুমার সাহা, সরো মন্ডল, মৃদুল রবিন, রুমন কাব্যসহ অজ্ঞাতনামা ১২/১৩জন গোয়ালন্দ বাজারের রিদয় সুপার মার্কেটের ২য় তলায় আমার অফিসে হামলা করে। এ সময় রাতুল আমাকে লক্ষ করে একটি কলমদানি ছুড়ে মারলে প্রধানমন্ত্রীর বাঁধাই করা ছবিতে লেগে তা ভেঙ্গে যায়। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানহানি ঘটে। এ সময় সুমন নামের একজন তাদের বাধা দিলে তাকেও মারধোর করা হয়। তারা আমার অফিসের টেবিলের কাঁচের গ্লাস ও অন্যান্য মালামাল ভাঙচুর করে৩৫হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করাসহ ড্রয়ারে থাকা ৭০হাজার টাকা নিয়ে যায়। তাদের চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা প্রাণ নাশের হুমকি ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
অভিযুক্ত গোয়ালন্দ পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি মো. রাতুল আহমেদ বলেন, আমার ঈদের শুভেচ্ছা ফেস্টুন সরিয়ে রিদয়ের ফেস্টুন লাগালে এ নিয়ে রিদয়কে ফোন দিলে সে ফোন না ধরায় অফিসে গিয়ে কথা বলার একপর্যায়ে তর্কাতর্কী হয়। তবে অফিসে কোনরুপ হামলা, ভাঙচুর অথবা লুটপাটের কোন ঘটনা ঘটেনি। ওরা নিজেরাই প্রধানমন্ত্রীর ছবির অবমাননা করে এবং অফিস ভাঙচুর করে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও সাজানো মামলা দিয়ে নোংরা খেলা খেলছে। আর তাছাড়া রিদয়ের বসার চেয়ার হতে প্রধানমন্ত্রীর ছবি অনেক ওপরে লাগানো ছিল। তার দিকে কেও কিছু ছুড়ে মারলেও তা কখনোই ছবিতে গিয়ে লাগার কথা নয়। আমি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনায়য় দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি করছি।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। এবং মামলার আসামিরা আদালত থেকে জামিনও নিয়েছেন। এ ঘটনায় অধিকতর তদন্ত চলমান রয়েছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মোস্তফা মুন্সি বলেন, ছাত্রলীগের মাঝে ভুল বোঝাবুঝি থেকে এমন উদ্ভুত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তবে এটা সাময়িক সমস্যা বলে মনে করি। তারা সবাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। এ বিষয়ে আমরা সিনিয়ররা বসেছিলাম। একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির রিপোর্টের আলোকে পরবর্তীতে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।