প্রচন্ড গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে গোমস্তাপুর উপজেলাবাসীর। পুরো আষাঢ় মাসে বৃষ্টি না হওয়ার এ নাভিশ্বাস সৃষ্টি হয়েছে। এই তাপদাহ গরমে সরকারি হাসপাতাল বা গ্রাম্য চিকিৎসালয়ে ডায়রিয়াসহ নানা রোগের আক্রান্ত ব্যক্তিরা চিকিৎসা নিচ্ছে। শ্রমজীবী ও কর্মজীবি লোকেরা পড়েছে বিপাকে। সূর্যের তাপের কারণে খেটে খাওয়া মানুষ কাছে মনযোগ দিতে পারছেন না। আমন চাষাবাদের জন্য মাঠ একেবারে শুকনো হয়ে পড়ে আছে। কৃষকরা দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়ে আছে। অনেকে বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না। কেউ কেউ একটু শীতল বাতাসের পরস পেতে ছুটে বেরুচ্ছে এদিক সেদিক। শীতল স্থান বা গাছের নীচে বসে প্রশান্তির ছোঁয়া নিচ্ছে।
এদিকে উপজেলার প্রানকেন্দ্র রহনপুর শহর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বাজার ও মোড়গুলোতে আখের রস,ডাব,বরফ,শরবত বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে প্রচন্ড গরমে ফ্রিজের কোমলপানি বা ঠান্ডা পানি তৃষ্ণা মিটাতে দোকানে কিনছেন। অনেক ছিন্নমূল লোককে গাছের নিচে,রাস্তা বা বাড়ির পাশে শীতল স্থানে শুয়ে থাকতে দেখা গেছে। বাতাস না থাকায় বাড়িতে সারাদিন বৈদ্যুতিক পাখা ঘুরছে। অনেক সময় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সেগুলো মেরামত করতে মেকানিক দোকানে ভীর লক্ষ্য করা গেছে। মানুষ বা পশুপাখি নয়, প্রখর তাপে গাছপালায় এর প্রভাব পড়েছে।
অটো ভ্যান চালক ইসমাইল বলেন, সকাল সাতটা পর সূর্যের প্রখর তাপ পড়তে থাকে। সন্ধ্যা পর্যন্ত থাকে। তাপের কারণে তিনি সহ অনেক রিকসা ও ভ্যানওয়ালা গাড়ি বের করছেন না। বের করলে গরমের অসহ্য যন্ত্রণার মধ্যে পড়তে হয়। কিছুক্ষণ পর পর পিপাসা লাগে। মাথা ঘুরে পড়ে যেতে হয়।
তৃতীয় শ্রেনী ছাত্রী আফিয়া আশরাফি বলেন, ঈদের ছুটির চলছে কয়েক দিন পর স্কুল খুলবে কিন্তু এ গরমে স্কুলের ক্লাস করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।
আখের রস বিক্রেতা মইদুল জানান, গরমে আখের রস ভালই বিক্রি হচ্ছে। তাপের কারণে তাঁকেও হিমসিম খেতে হচ্ছে। তবে রাস্তায় হেঁটে যাওয়া ব্যক্তিরা বেশি খাচ্ছে রস।
রহনপুর স্লুইসগেটের পাশের পৌর শিশু পার্কের গাছের ছায়ায় বসে থাকা আবদুর রশিদ জানান, স্টেশন বাজার যাচ্ছিলেন তিনি। তাপের কারণে হাটতে পারছিনা। ঘেমে শরীর ভিজে গেছে। তাই গাছের নিছে বসে গেছি বিশ্রামের জন্য।
কৃষক এরশাদ আলী বলেন, আমন চাষাবাদের মৌসুমে বৃষ্টি নেই, মাঠ খা খা করছে। এ সময় জমির আইল গুলো ঠিক করে রাখছি। কিন্তু সূর্যের তাপে জমিতে কাজ করতে পারছিনা। কিছুক্ষণ পর মুখ শুকিয়ে যাচ্ছে। কয়েক ঘন্টা কাজ করে চলে আসতে হচ্ছে।
গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক সেলিম রেজা বলেন, তাপমাত্রা বেশির কারণে প্রতিদিন শিশুসহ সব বয়সী লোকজন ভর্তি হচ্ছে। ডায়রিয়াসহ পেটের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি। তিনি খাবারের প্রতি সকলকে সচেতন হবার আহবান জানান।