চলতি বর্ষা মৌসুমে পাবনার সুজানগরের ঐতিহ্যবাহী গাজনার বিলে তেমন পানি না থাকায় পর্যটক নৌকাগুলো অচল হয়ে পড়েছে। এতে ওই সকল নৌকা মালিকরা আর্থিক সংকটে ভুগছেন। বিলপাড়ের বাসিন্দারা জানান, প্রতিবছর আষাঢ়-শ্রাবণ মাস আসলেই গাজনার বিল বর্ষার নতুন পানিতে থৈথৈ করে। আর বিলে ওই পানি থাকে পৌষ মাস পর্যন্ত। বর্ষার শুরু থেকে পৌষ মাস পর্যন্ত দীর্ঘ সময় প্রায় অর্ধশত সবুজ শ্যামল গ্রাম বেষ্টিত বিশাল বিস্তৃত গাজনার বিল সত্যই অপরূপ সৌন্দর্যে রূপ নেয়। সে কারণে এ সময় দূর-দূরান্ত থেকে হাজার হাজার নারী- পুরুষ পর্যটক ছুটে আসেন গাজনার বিলে নৌ- ভ্রমণ করতে। আর ওই সকল পর্যটকদের বিলে নৌ-ভ্রমণের জন্য বিলপাড়ের বাসিন্দারা বাণিজ্যিকভাবে তৈরি করেছেন ইঞ্জিল চালিত পর্যটক নৌকা। বিলপাড়ের পাইকপাড়া গ্রামের পর্যটক নৌকার মালিক আনসার আলী জানান, বিলপাড়ের উলাট, বদনপুর, চরদুলাই, খয়রান এবং বোনকোলাসহ আশপাশের বিভিন্ন গ্রামে শতাধিক পর্যটক নৌকা রয়েছে। তারা বর্ষা মৌসুমে গাজনার বিলে ভ্রমণে আসা পর্যটকদের বাণিজ্যিকভাবে নৌ ভ্রমণ করায়ে অর্থ উপার্জন করে থাকেন। কিন্তু এবছর পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ গত আষাঢ় মাসে পদ্মা নদী থেকে বিলে পানি প্রবেশের একমাত্র রুট ত্রিমোহনী স্লুইসগেট বন্ধ রাখার কারণে চলতি বর্ষা মৌসুমেও বিলে পানি আসতে পারে নাই। বিলপাড়ের উলাট গ্রামের নুরুল ইসলাম শেখ বলেন প্রাকৃতিক বৃষ্টিপাতে বিলে যে পরিমাণ পানি হয়েছে তাতে পর্যটক নৌকা চলার মতো না। তাছাড়া বিলে পর্যাপ্ত পানি থৈ থৈ না করলে পর্যটকরা নৌ-ভ্রমণে আসেন না। বিলে পর্যাপ্ত পানি থাকলে বিশেষ করে প্রতি শুক্রবার এবং শনিবার বিলের খয়রান ব্রিজ পয়েন্টে পর্যাপ্ত পর্যটক নৌ-ভ্রমণে আসেন। কিন্তু এবছর চলতি বর্ষ মৌসুমে বিলে তেমন পানি না থাকায় পর্যটকদের দেখা নেই। ফলে ওই সকল পর্যটক নৌকাগুলো অচল হয়ে পড়ে আছে। এ ব্যাপারে বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার বলেন আষাঢ় মাসে বিলে পানি প্রবেশ করলে বিলের আশপাশের নিচু জমিতে আবাদ করা পাট, বোনা আমন ও রোপা আমন ধান ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সে কারণে ওই সময় স্লুইসগেট বন্ধ রাখা হয়। তবে গত ৭/৮দিন হলো গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।