স্ত্রীকে শ্লীলতাহানির প্রতিবাদে বখাটেকে মারধর করার ঘটনা ভিন্নখাতে নিতে একটি মন্দিরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করার অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাৎক্ষনিক পুলিশ অভিযান চালিয়ে একই পরিবারের তিনজনসহ মোট চারজনকে আটক করেছে।
তবে শ্লীলতাহানির অভিযোগে কাউকে আটক না করায় জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে নগরীর ২৬নং ওয়ার্ডের পূর্ব হরিনাফুলিয়া এলাকার আল মদিনা সড়ক এলাকায়।
আটককৃতরা হলেন, একই এলাকার রমজান হাওলাদার, তার বাবা মোতালেব হাওলাদার, মিলন রাঢ়ী ও মামুনুর রশিদ মামুন। আটক রজমানের স্ত্রী নুপুর বেগম জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যার পরে তিনি রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় দাঁড়িয়ে থাকা তিন বখাটের যুবক তার মুখের ওপর সিগারেটের ধোঁয়া দেয়। তিনি এর প্রতিবাদ করলে বখাটেরা তাকে শ্লীলতাহানি করে। তাৎক্ষনিক তিনি বিষয়টি তার ননদ জামাই মিলন রাঢ়ীকে ফোন করে জানায়। মিলন ঘটনাস্থলে পৌঁছে এ ঘটনার কারণ জানতে চাইলে বখাটেরা তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়। পরে স্থানীয় নিতাই ঘরামী ওই তিন যুবককে সরিয়ে নিয়ে যায়।
নুপুরের স্বামী রমজান হাওলাদার জানান, বিষয়টি আমি শোনার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারি বখাটেদের একজনের নাম পলাশ। বহিরাগত ওই বখাটেরা স্থানীয় গণেশ মিস্ত্রি বাড়িতে আছে। পরে আমি ওই বাড়িতে গিয়ে বখাটেদের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তারা ক্ষিপ্ত হয়। একপর্যায়ে পলাশকে চরথাপ্পর দিলে ওই বাড়ির নিতাই ঘরামিসহ অন্যান্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। পরে তাদের তোপের মুখে আমরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করি।
রমজানের বোন জামাতা মিলন রাঢ়ী জানান, আমরা গণেশ মিস্ত্রির বাড়ি থেকে চলে আসার পরে শুনতে পাই তারা নিজেরা ওই বাড়ির রাধা গোবিন্দ মন্দিরের আসবাবপত্র তছনছ করে মন্দির ভাংচুর করা হয়েছে বলে সাম্প্রদায়িক ইস্যু ছড়িয়ে দেয়।
পলাশ অভিযোগ করে বলেন, আমরা মন্দিরে প্রার্থনা করতে ছিলাম, কিছু বুঝে ওঠার আগেই কয়েকজন মুসলমান এসে আমাদের উপর হামলা চালিয়ে মন্দির ভাংচুর করেন। তবে কি কারণে তাদের উপর হামলা করা হয়েছে এমন প্রশ্নের কোন সদূত্তর দিতে পারেননি পলাশ। ধলু নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, আমিসহ আরো কয়েকজন মন্দিরে প্রার্থনা করতেছিলাম, এরমধ্যেই কয়েকজন মন্দিরে ঢুকে আমাদের মারধর শুরু করে।
খবর পেয়ে ঘটনার পরপরই মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে নয়টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন কোতোয়ালি মডেল থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার শারমিন সুলতানা রাখি, অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজিমুল করিম, ওসি (তদন্ত) লোকমান হোসেন। তারা উভয়পক্ষের কথা শোনার পর রমজান হাওলাদার, তার পিতা মোতালেব হাওলাদার ও মিলন রাঢ়ীকে আটক করে। একইসাথে ২৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাপ্পির সাথে আসা মামুন নামের এক ব্যক্তিকে দেশীয় অস্ত্রসহ আটক করা হয়।
বুধবার দুপুরে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি জানান, মারামারির অপরাধে চারজনকে আটক করা হয়েছে। মন্দির ভাংচুরের কোন ঘটনা ঘটেনি। ২/১টি পোষ্টার ছেড়া হয়েছে। শ্লীলতাহানির কারণে ঘটনার সূত্রপাত বলে শুনেছি। এনিয়ে কোনপক্ষই এখন পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।