মুজিববর্ষে দেশের সব ভৃমিহীন পরিবারকে নতুন ঘর দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই প্রতিশ্রুতি রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসাবে আগামী কাল বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার একশ ৪২টি ভৃমিহীন পরিবারকে জমিসহ ঘর উপহার দেওয়া হচ্ছে। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ভৃমিহীন ও গৃহহীনদের জমির দলিল ও ঘর হস্তান্তর করবেন।
বুধবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারে অফিস কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কতৃর্ক আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় তৃতীয় পর্যায়ে (দ্বিতীয় ধাপে) ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে জমি ও ঘর হস্তান্তর কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে ইউএনও এস. এম. শান্তুনু চৌধুরী এসব তথ্য জানান। এ সময় বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ইউএনও এস. এম. শান্তুনু চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষনা দিয়েছিলেন মুজিব বর্ষে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না। প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষনা বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে উপজেলায় প্রথম পর্যায়ে ৫৭০টি এবং তৃতীয় পর্যায়ে (১ম ধাপে) ৫২টি গৃহহীন পরিবারের মধ্যে ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। তৃতীয় পর্যায়ে (দ্বিতীয় ধাপে) এখন একশ ৪২টি গৃহহীন পরিবারের মধ্যে জমিসহ ঘর হস্তান্তর করা হবে।
ইউএনও বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত চরপোড়াগাছা ইউনিয়নের কলাকোপা এলাকায় আশ্রায়ন প্রকল্পে ৫.১৫ একর অবৈধ দখল উদ্ধারকৃত খাস জমিতে তৃতীয় পর্যায়ের (২য় ধাপ) এই ঘরগুলো নির্মান করা হয়েছে। প্রতিটি ঘরের নির্মাণ বাবদ ২ লাখ ৫৯ হাজার ৫শ’ টাকা বরাদ্দ করা হয় এবং প্রত্যেক পরিবারের নামে দুই শতাংশ জমি রেজিস্ট্রি করে নামজারি করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এই পরিবারগুলোর জন্য পাকা রাস্তা, তিনটি পুকুর, প্রতি ঘরে বিদ্যুৎ, ১৩টি গভীর নলকুপ এবং বিনোদনের জন্য স্লিপার, দোলনা রয়েছে।
১৯৭২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন নোয়াখালী জেলা বর্তমান লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার চরপোড়াগাছা গ্রাম পরিদর্শনে যান এবং ভূমিহীন-গৃহহীন, অসহায় ছিন্নমুল মানুষের পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু করেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর ভূমিহীন-গৃহহীন, অসহায় ছিন্নমুল মানুষের পুনর্বাসনের মতো এ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহনের পর ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ‘আশ্রয়ণ প্রকল্প’ নামে এ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।
এ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার চর আবদুল্যা ইউনিয়নের চরগজারিয়ার নির্মাণ করা হয়েছিল দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম আশ্রয়ণ প্রকল্প। ২০০১ সালের ১৬ জুন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে ওই প্রকল্পটি উদ্বোধন করেন। উপজেলার বিচ্ছিন্ন ও দুর্গম দ্বীপ চরগজারিয়ার প্রায় ৯৭৩ একর খাস জমির ওপর নির্মিত ওই আশ্রয়ণে ৯টি কলোনীর ৯০টি ব্যারাক হাউজে ৯০০ ছিন্নমূল ও নদীভাঙা ভূমিহীন পরিবারকে পুনর্বাসিত করা হয়েছিল। মেঘনা নদীর ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়ে সেই আশ্রয়ণ প্রকল্পটি বিলীন হয়ে যায়।