জামালপুর সদর উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলম আলীর বিরুদ্ধে সরকারি প্রকল্পের বিপুল পরিমান অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। জামালপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটুস লরেন্স চিরান সাংবাদিকদের জানান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে প্রধান করে তিন সদসের কমিটি গঠন করা হয়েছে। অনিয়মের প্রমান পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সরেজমিনে ঘুরে জানাযায় জামালপুর সদরের শরিফপুর ইউনিয়নে ২০১৯-২০২০, ২০২০-২০২১ এবং ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠানো উন্নয়ন, সংস্কার ও রক্ষনাবেক্ষণ প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা,কবরস্থান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সড়ক উন্নয়নে প্রায় অর্ধশতাধিক প্রকল্পর গ্রহন করে এসব প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অর্থ কাজ না করে ইউপি চেয়ারম্যান অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ এলাকাবাসির।
২০২১-২২ অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কাবিখা প্রকল্পের আওতায় সদর উপজেলার গোদাশিমলা বাজার থেকে ঢেংগারগড় তেতুলতলা বাজার পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের জন্য প্রায় ৯ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয় সরকার। অথচ ঢেংগারগড় গ্রামের মোহাম্মদ আলী জানিয়েছেন,এই সড়কের গত এক যুগে এক কুদাল মাটিও ফেলা হয়নি। সরকার যদি এই রাস্তার জন্য কোন বরাদ্দ দিয়ে থাকে তাহলে পুরোটাই আত্মসাৎ করা হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থ বছরের আওতায় ঢেংগারগড় কপালীপাড়া মসজিদ থেকে নয়াপাড়া তোতার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণে ৮ মেট্রিক টন, নয়াপাড়া হতে দেওয়ালের ঘাট পর্যন্ত মাটি ভরাট ১৫ মেট্রিক টন, ঢেংগারগড় হুছির বাড়ি থেকে সুরুজ বাজার হয়ে সিঙ্গাবিল পর্যন্ত রাস্তা পুন:সংস্কারের জন্য ২৪ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দিলেও তিন প্রকল্পের কোথাও এক টুকরা মাটি পড়েনি। দেওয়ালের ঘাট এলাকার রহিমা বেগম,আছর উদ্দিন,ছালাম জানায়, এই রাস্তায় কোন প্রকার মাটি টাকা হয়নি।
জয়রামপুর-রঘুনাথপুর শশাখালী খালের উপরের ব্রীজের দুই পাশের এপ্রোজ সড়কের জন্য ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হলেও কাজ না করেই পুরো টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই ব্রীজে দুই পাশে^ এপ্রোজে মাটি না কাটার কারণে কোন কাজেই আসছে না ব্রীজ।
৫ লাখ টাকায় এডিবির অর্থায়নে শরিফপুর বাজার থেকে মাদ্রাসা হয়ে রেললাইন পর্যন্ত রাস্তা সিসিকরণ প্রকল্পে অর্ধেক কাজ হলেও জয়রামপুর বন্দেরবাড়ি রাস্তার কোন কাজ হয়নি বলে স্থানীয়রা জানান।
শরিফপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলম আলীর কাছে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তা’ অস্বীকার করেছেন।
এবিষয়ে জামালপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটুস লরেন্স চিরান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে প্রধান করে ৩ সদসের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। অনিয়মের প্রমান পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।