সৈয়দপুরে সাংবাদিকদের কাছে কেঁদে কেঁদে ন্যায় বিচার দাবী করলেন দিনাজপুর চিরিরবন্দর আমেনা বাকী স্কুলের চাকুরী চূত্য অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান। ২১ জুলাই তিনি সৈয়দপুরে এসে সাংবাদিকদের কাছে এমন কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন তার স্ত্রীকেও চাকুরী থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি ন্যায় বিচারের আশায় স্কুল কর্তৃপক্ষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
চিরিরবন্দর উপজেলার আমেনা বাকী স্কুল অ্যান্ড কলেজ। সুনামধন্য এ স্কুল অ্যান্ড কলেজের জন্মবার্ষিকী ছিলো গত ৫ জুলাই ২০২২। এ প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়ে আসছে এবি ফাউন্ডেশন কর্তৃক। জন্মদিনের ঐ অনুষ্ঠানে,প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও বঞ্চিত ছিলো প্রতিষ্ঠা কালিন শিক্ষক মিজানুর রহমান।
কি কারণে বঞ্চিত ছিলেন শিক্ষক মিজানুর রহমান এ বিষয়ে তিনি দুঃখের সাথে জানান আমেনা-বাকী রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল পরবতীতে কলেজ এর প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে আমি (২০০০-২২) সাল পর্যন্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। দীর্ঘ প্রায় ২২ বছর আমি কোনদিন ব্যক্তিগত কোন ছুটি নেইনি এমনকি আমি কোন দিন অন্য কোন চাকুরীর জন্যও কোথাও আবেদন করিনি। আমার কোন ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই, জমানো কোন টাকাও নেই। ইচ্ছে ছিল ছেলে-মেয়ে শিক্ষিত হলেই শান্তি কিন্তু আজ এ কি হল। মেয়ে এস,এস,সি পরীক্ষা দেবে আর ছেলে চতুর্থ শ্রেণিতে। ছেলে আর আমেনা-বাকী স্কুলে দুঃখে কষ্টে যাচ্ছে না, মানসিক অবস্থা পরিবারের কারও ভাল নেই। আমার স্বপ্ন ছিল একটি গুনগত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করা যা আমি কিছুটা হলেও করতে পেরেছি। কিন্তু শেষ বয়সে এসে ভাল কাজের প্রতিদান আমি পেলাম না। পেলাম শুধু মিথ্যা বদনাম,অপবাদ যা আমার জীবনের জন্য অতীব কষ্টের,যন্ত্রনার। প্রথমে এ প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু হয়,সল্প সংখ্যক শিক্ষার্থী নিয়ে। সেসময় এটি ছিলো কিন্ডারগার্টেন স্কুল। উপরে টিন নিচে বেড়া চাটি এমন চার-পাঁচটি কক্ষে চলতো শিক্ষা কার্যক্রম। আমার হাতে তিল তিল করে গড়া এ প্রতিষ্ঠানটি আজ পরিনত হয়েছে বহুতল ভবনে।
হঠাৎ করে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক একটি মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়। ওই অভিযোগ নিয়ে ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান .স্যার অনভিপ্রেত ঘটনার নিয়ন্ত্রণ ও সমাধান করার সামর্থ্য থাকলেও কোন এক অজানা কারণে তিনি তা করেননি।
ইচ্ছা করলে ওই অপপ্রচার রোধ করে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারতেন কিন্তুু তিনি তাও করেননি। মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তদন্ত ছাড়াই পরিচালক স্যারের ব্যাকডেটে ১৩ জুনের স্বাক্ষরিত আমার নামে ব্যক্তিগত একটা অফিস আদেশটি ২৩ জুন সোস্যাল মিডিয়া ফেসবুক ও ম্যাসেঞ্জারে প্রচার করা হল।
দীর্ঘ ২২ বছরের কাজের কি কোন মূল্যই নেই। আমি কি কিছুই করিনি এই প্রতিষ্ঠানের জন্য। এত কিছু করার পরেও মিথ্যা অপবাদ কেন আমার বিরুদ্ধে। শুধু আমার প্রতি অবিচার নয়। আমার স্ত্রীর প্রতিও করা হয় অবিচার। তাকেও চাকুরী হতে অব্যহতি দেয়া হয়। ১২ ঘন্টার মধ্যে বাসা থেকে বের করে দেয়া এবং আমার নামে থানায় জিডি করা এটা কোন ধরনের অত্যাচার।
একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে এত নির্যাতন কেন। আমার কি ছেলে মেয়ে আত্মীয়স্বজন পরিবার পরিজন নাই, সমাজ নাই।ক্ষমতা আর টাকা থাকলেই কি সব কিছু সম্ভব, আমার তো মনে হয় এখন সবকিছুই সম্ভব। আমি কথা দিতে পারি ঘটনা শতভাগ মিথ্যা বানোয়াট ভিত্তিহীন, মিথ্যা বেশি দিন চাপিয়ে থাকবে না।
ল্যাবে ৪২ জন ছাত্রী নিয়ে একসাথে ক্লাস হয়। কম্পিটার ল্যাবসহ সম্পূর্ণ প্রতিষ্টানটি সিসি ক্যামেরা দ্বারা আবদ্ধ এবং একজন ল্যাব এ্যাসিসটেন্ট সার্বক্ষনিক থাকেন সেখানে যৌন হয়রানী কল্পনাই করা যায় না তবে মাউস ধরে শেখানোর সময় দুই একজন মেয়ের হাতে হাত লাগতেই পারে।
এটা আবার কোন ধরনের যৌন হয়রানী। যেখানে যৌন হয়রানীর কোন উপাদান নাই। তাহলে শিক্ষকরা ছাত্র-ছাত্রীদের কীভাবে কম্পিউটার শেখাবেন। তিনি কেঁদে কেঁদে বললেন দীর্ঘ ২২ বছরের পরিশ্রমে গড়া প্রতিষ্ঠান আমাকে দিল কলঙ্কের সার্টিফিকেট।
আমি যথাযথ তদন্ত চাই। তদন্ত করে যদি আমি দোষী প্রমানিত হয়ে থাকি তাহলে আমাকে যে শাস্তি দেয়া হবে আমি তাই মাথা পেতে নেব।
এ ব্যাপারে ফাউন্ডেশন চেয়ারম্যান ডাঃ আমজাদ হোসেনের সাথে মোবাইলে কথা হলে তিনি জানান ব্যস্ত আছি পরে কথা বলবো।