লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে চাহিদার তুলনায় বেশী উৎপাদন হচ্ছে ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। উপজেলায় উৎপাদনকৃত মাছের চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত মাছ দেশের বিভিন্ন জেলায় চালান হচ্ছে। যা দেশের অর্থনীতিতে রাখছে প্রত্যক্ষ ভূমিকা। মৎস্য সম্পদের উন্নয়নে সরকারে নেওয়া বহুমুখী উদ্যোগে উপজেলায় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি বছর উপজেলার নদী, খাল, পুকুর ও অন্যান্যে যে মাছ উৎপাদন হয় তা উপজেলায় আমিশের চাহিদা পূরণ করে উদ্বৃত্ত থাকে।
শনিবার দুপুরে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন এসব তথ্য জানান। উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মৎস্য দপ্তর এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
মতবিনিময় সবায় র্যালী, পুরুস্কার বিতরণ ও পোনা মাছ অবমুক্তকরণ, মৎস্যচাষি ও মৎস্যজীবিদের সাথে মতবিনিময়, মৎস্য বিষয়ক বিশেষ পরামর্শ সেবা প্রদান, পুকুরের মাটি ও পানি পরীক্ষা এবং প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, অবৈধ জালের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা, মৎস্যচাষিদের মাছ চাষ বিষয়ক বিশেষ পরামর্শ সেবা প্রদান এবং সুফলভোগীদের মাছ চাষ বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও উপকরণ বিতরণসহ সপ্তাহব্যাপী বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন এই কর্মকর্তা।
এসময় তিনি বলেন, ৩৭৪ বর্গ কিলোমিটারের এই উপজেলায় পৌরসভাসহ ৮টি ইউনিয়নের মোট ২ লক্ষ ৭৯ হাজার ৯ জন জনসংখ্যার জন্য বছরে মাছের চাহিদা ৬ হাজার ১১০ মেট্রিক টন। এ উপজেলায় বছরে মাছের উৎপাদন হয় ১৭ হাজার ২২০ মেট্রিক টন। এর মধ্যে নদীতে ইলিশের উৎপাদন ৬ হাজার ১৭০ মেট্রিক টন। এতে উদ্বৃত্ত থাকে ১১ হাজার ১১০ মেট্রিক টন।
এছাড়া উপজেলায় মোট পুকুর সংখ্যা ১৬ হাজার ২৭৮টি, ব্যক্তি মালিকাধীণ পুকুর ১৬ হাজার ২৩৫টি। সরকারি পুকুর ৩৩টি, খাল ১৬টি। মেঘনা নদী ২৫ কিলোমিটার এলাকায় ৫২ হাজার হেক্টর। নিবন্ধকৃত জেলে ২০ হাজার ২৭৮ জন। মৎস্য চাষি ১২ হাজার ৫০০ জন। মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি ১টি, মৎস্যজীবি সংগঠন ৩টি, বোট মালিক সমিতি ২টি। মাছ ঘাট ৯টি, আড়ত ৭টি, মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ১টি এবং পোনা উৎপাদনকারী ১৬ জন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা মাছ চাষে সফল। উপজেলায় মাছের চাহিদা মিটিয়ে আমাদের উদ্ধৃত্ত রয়েছে। এই উদ্বৃত্ত মাছ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় চালান হচ্ছে। আমরা বিভিন্ন ভাবে চাষীদের উৎসাহিত করার চেষ্টা করছি। মাছ চাষী ও খামারিদের জন্য মৎস্যচাষ উপকরণ এবং প্রকল্প তৈরীতে সহযোগিতা করা হয়। মৎস্য খাতে ক্ষুদ্র ঋণ দেয়ার চেষ্টার পাশাপাশি মৎস্যজীবীদের মাঝে মৎস্য অধিদপ্তরের আওতায় ভিজিএফ এর খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়। এছাড়াও সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ইলিশ ধরা নিষেধাজ্ঞা চলাকালে নদী ও সমুদ্রগামী নিবন্ধিত জেলেদের সহায়তা করা হয়ে থাকে। যাতে তারা ওই সময়টাতে পরিবার নিয়ে চলতে পারে।
‘নিরাপদ মাছে ভরবো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’-এমন শ্লোগানে এবারের মৎস্য সপ্তাহের কর্মসূচী নিয়ে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। ২৯ জুলাই পর্যন্ত এসব কর্মসূচি চলবে।