নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা সদরের বিভিন্ন স্থান এখন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন বেশ কয়েকটি ডাস্টবিন তৈরি করে দিলেও দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা ময়লা অপসারণের উদ্যোগ না নেয়ায় সেগুলো দুর্গন্ধ ছড়িয়ে এলাকার জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে ফেলেছে। ময়লা ফেলার জায়গা নেই এই অজুহাত দেখিয়ে প্রশাসন দায় এড়াচ্ছেন।
সরেজমিনে উপজেলা সদরের লিচুবাগান হাউজ বিল্ডিং এলাকায় গিয়ে দেখা যায় আন্ত:জেলা মহাসড়কের পূর্বপাশের্^ তৈরি করা ডাস্টবিন উপচে চারিদিকে ময়লায় সয়লাব হয়ে আছে। আশেপাশের বাসাবাড়ি থেকে প্রতিদিন এখানে ময়লা ফেলা হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে ময়লাগুলো অপসারণের ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
সড়কের পাশের চা-দোকানি নয়ন কুমার অভিযোগ করলেন, ময়লার দুর্গন্ধে লোকজন এখন তার দোকানে চা খেতে আসতে চান না।
পাশের হাউস বিল্ডিংয়ে বসবাস করেন একজন অবসরপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা: রঞ্জন চৌধুরী। সেখানেই তার ব্যক্তিগত চেম্বার। তিনি অভিযোগ করলেন, দূর্গন্ধে তার চেম্বারে রোগী আসা কমে গেছে।
একই অবস্থা উপজেলা সদরের মধ্য বাজার, মাছ বাজারসহ আশেপাশের কয়েকটি স্থানের। স্থানীয়রা জানান, আগের উপজেলা নির্বাহী অফিসারের উদ্যোগে এই উপজেলাকে ‘গ্রীণ মহাদেবপুর-ক্লিন মহাদেবপুর’ ঘোষণা করে উপজেলা সদর ময়লামুক্ত রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এ সময় বিভিন্ন পেশাজীবী ও সুধীদের একাধিক টিম গঠন করে প্রতিদিন স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ময়লা পরিস্কার করা হতো। ইউএনওসহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারাও এতে অংশ নিতেন। পরে উপজেলা সদরের ময়লা অপসারণের জন্য কয়েকজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিয়োগ করা হয়। তাদেরকে কিনে দেয়া হয় ভ্যানগাড়ি। তৈরি করে দেয়া হয় বেশ কয়েকটি ডাস্টবিন। কিন্তু আগের ইউএনও বদলী হবার পর সে কর্মসূচি বন্ধ হয়ে যায়। গত তিন বছরে ডাস্টবিনগুলো ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। পারিশ্রমিকের অভাবে পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা আর কাজ করেন না।
মহাদেবপুর ইউএনও মিজানুর রহমান বেশ কিছুদিন থেকে ঢাকায় অবস্থান করায় এ ব্যাপারে তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। মহাদেবপুর সদর ইউপি চেয়রম্যান সাঈদ হাসান তরফদার শাকিল বলেন, এসমস্যার সমাধানের জন্য উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় আলোচনা হয়েছে। এজন্য ১০ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। কিন্তু ময়লা ফেলার জন্য জায়গা না পাওয়ায় সেগুলো অপসারণ করা যায়নি।