খুলনার ডুমুরিয়ায় ভরা বর্ষা মৌসুমে অনাবৃষ্টি আর প্রচন্ড খরায় ফেঁটে চৌচির হয়ে গেছে হাজার হাজার হেক্টর আবাদি জমি। ফসল ফলাতে পানির জন্য হাহাকার করেছে কৃষক। বিলের মধ্য সরকারি খালগুলোও অবৈধভাবে বাঁধ,নেট-পাটা দিয়ে দখল করে রেখেছে প্রভাবশালীরা। ফলে পানি নিষ্কাশন তো দুরের কথা খাল পাড় দিয়েও হাটতে দেয়া হয়না কাউকে। এমন পরিস্হিতি সৃষ্টি হয়েছে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার গুটুদিয়া ইউনিয়নের লাইনবিলপাবলা এলাকার খাল বিলগুলোতে। এসব কারণে স্হানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শেখ তুহিনুল ইসলাম নিজস্ব উদ্যােগে খালগুলো দখলমুক্ত কার্যক্রম শুরু করেছেন। প্রায় মাস ব্যাপী ধরে চলছে এই উচ্ছেদ অভিযান। সংশ্লিষ্ট সূত্র এবং শনিবার সরেজমিনে যেয়ে
জানা গেছে, আষাঢ় মাস পেরিয়ে শ্রাবন মাসের মাঝা মাঝি সময় পার হতে চললেও বর্ষা মৌসুমে এবার তেমন বৃষ্টির দেখা মিলছেনা। অন্যান বছরের ন্যায় যেখানে এই সময়ে খাল-বিল পানিতে থৈথৈ করার কথা, সেখানে খরায় ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে এলাকার শত শত হেক্টর আবাদি জমি। রোদে পুড়ে মরে যাচ্ছে বিভিন্ন জাতের সবজি। এক ফোঁটা পানির জন্য হাহাকার করছে কৃষকেরা। অথচ বিলের মধ্যকার সরকারি খালগুলোতে বাঁধ দেওয়ার ফলে নদীর পানি প্রবেশ বন্ধ হয়ে আছে কয়েক যুগ ধরে। খুলনা শহর কেন্দ্রিক কতিপয় প্রভাবশালীদের দখলে অকেজো হয়ে পড়া খালগুলোর অবৈধ বাঁধ অবশেষে স্হানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের উদ্যােগে অপসারণ কার্যক্রম চলছে। প্রায় মাসব্যাপি উচ্ছেদ অভিযানে এপর্যায়ে কালীতলা খাল, সাইমপুরি খাল, মতিয়ার খাল, তেঁতুলতলা খাল, বড়শিরা খাল, বিলপাবলা খাল, ভেল্কামারী খাল, পঞ্চু খাল, খাজুরতলা দোয়ানি খালসহ প্রায় অর্ধশত সরকারি খালের অবৈধ বাঁধ-পাটা অপসারণ করা হয়েছে। প্রতিদিন ২৫/৩০ জন শ্রমিক এ কাজে নিয়াজিত করা হয়েছে। খাল সচল হওয়ার পর থেকে বিলের মধ্য এখন পানি আসতে শুরু করেছে। লাইন বিলপাবলা বিলের কৃষক মো. আছাদ বলেন, খালগুলো কয়েক যুগ ধরে বন্ধ ছিলো। প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করতো। কৃষি কাজে আমরা সময় মত পানি পেতাম না।খালগুলো সচল হওয়ায় এখন থেকে বিলের পানি নিষ্কাশনে সমস্যা হবেনা।
ওই বিলের এক ঘের ব্যবসায়ীর স্ত্রী শান্তিলতা জানান,খাল দখলমুক্ত হওয়ায় তাদের অনেক ভালো হয়েছে।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান শেখ তুহিনুল ইসলাম বলেন, প্রায় দেশ স্বাধীনের পর থেকেই বিলপাবলা মৌজার অধিকাংশ খালগুলো সরকারের বে-দখলে। তিনি বলেন, এ বছর অনাবৃষ্টিতে ফসল ফলানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে কৃষকের। কয়েক’শ হেক্টর জমি অনাবাদি হয়ে পড়ে আছে। তাই কৃষকের কথা চিন্তা করে নিজ উদ্যাগে খাল উন্মুক্ত করণের কাজ শুরু করেছি। এ পর্যায়ে তার প্রায় ৩ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে বলে দাবী করেন তিনি।
এ বিষয়ে ডুমুরিয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) মো.মামুনুর রশীদ বলেন, সরকারি খালের অবৈধ দখল উচ্ছেদ অভিযান একটি চলমান প্রক্রিয়া। এটা অব্যাহত থাকবে। আর যে সমস্ত খাল বন্দোবস্ত দেয়া আছে।জনস্বার্থে সে সব খালের বন্দোবস্ত বাতিলের কার্যক্রম চলছে।