যশোরের ঝিকরগাছায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা নগদ নামের মোবাইল কোম্পানির গিলে খাচ্ছে। এমনই অভিযোগ ভুক্তভোগী অভিভাবকদের। অভিযোগ জানিয়েও ভুক্তভোগীদের সাহায্যে এগিয়ে আসেনি নগদ কোম্পানি অথবা স্কুল কতৃপক্ষ। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পান নাই বলে জানিয়েছেন।
নগদ এ আসা উপবৃত্তির টাকা নগদ গিলে খাচ্ছে। তারই বর্ণনা দিলেন কামারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ম শ্রেণির ছাত্র শেখ তাহসিফ মাহির পিতা শেখ সোহেল আজম।
তিনি জানালেন - আমার ০১৮৩১০৯৫২৪৬ মোবাইল নম্বরে নগদ অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলতে গেলে দেখতে পাই অ্যাকাউন্ট লক হয়ে আছে। অ্যাকাউন্ট চালু করতে যশোর পোস্ট অফিসে নগদ সেবা ২নং কাউন্টারে গেলে তারা আমার যথাযথ আইডেনটিটি নিয়ে একটি পাসওয়ার্ড প্রদান করে। পাসওয়ার্ড দিয়ে একাউন্টে লগ ইন করে দেখি ব্যালেন্সে এক টাকাও নেই। গত ২১/৭/২২ ইং তারিখ ০১৯০৬৪৯৩৯০২ এজেন্ট নং থেকে ১৪৫০ টাকা ক্যাশ আউট করে নিয়েছে। পাসওয়ার্ড না থাকায় লক করা অ্যাকাউন্ট থেকে কিভাবে টাকা উঠানো হলো এই প্রশ্নের কোনো সদুত্তর না দিয়ে দায়িত্বরত ব্যক্তি আমাকে বলেন, আপনি একটা অভিযোগ করে যান। হয়তো মঙ্গলবার আপনার টাকা আবার ফেরত আসতে পারে। ১ আগস্ট রাত ১০ টা ৩২ মিনিটে ১৪৫০ মোবাইলে ক্যাশও হলো।
তিনি বলেন, এই টাকা আত্মসাৎের ঘটনার সাথে কোম্পানির লোক জড়িত বলে আমার ধারণা।
একই অভিযোগ জানিয়েছেন - ০১৩২০ ৪৬২৬৫৯, ০১৯১১ ৮৩৮৩৩৪৪৯, ০১৭৪৮ ১০৩৪৭০, ০১৭৫১ ৬৬৫০০৪, ০১৯৬১ ৪১৮০৫৫, ০১৯৫৬ ০৮৬৮৫১, ০১৭৩৩ ৪১৪৭৫৮, ০১৯৩১২৯৭৫২৫, ০১৩২০ ৮৪৩৫৪৭, ০১৯৮৩ ৬৭৬৫৩৭, ০১৩২১ ৫৬৫৪৮৯, ০১৭৮৮ ৫০০৯১০, ০১৯২২ ৮৭৫৯৩৬, ০১৭৭৭ ৬৯৫২৪৮, ০১৭৩৪ ৪২২২৩৭ মোবাইল নম্বরধারী।
এছাড়াও কৃষ্ণনগর গ্রামের মুসলিমা, মোবারকপুরের রেহেনা, কীর্তিপুরের বিলকিস এরকম আরও অন্তত ২০ জন একই অভিযোগ করেন যে তাদের বন্ধ অ্যাকাউন্ট নগদের কাছ থেকে পিন সংগ্রহ করে খুলে দেখা গেছে তাতে টাকা নেই। কেউ সেই টাকা ২১ জুলাই উঠিয়ে নিয়েছে।
কৃষ্ণনগর মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির তাকিয়া তাজিনের মাতা বুধবার দুপুরে জানান, নগদ এ টাকা না পেয়ে প্রধান শিক্ষককে জানিয়েও কোন ফল পায়নি।
প্রধান শিক্ষক এস এম আকিবুজ্জামান কে দুইবার সেলফোনে কল দিলে তিনি গ্রহণ না করায় তার মতামত পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ইসমত আরা পারভীন জানান, আমরা জেলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অভিভাবকদের অভিযোগের কথা জানিয়েছি।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ অহিদুল আলম জানান, আমি এ ধরনের কোন অভিযোগ পাইনি।
খুলনা বিভাগীয় কর্মকর্তা জিয়াউল কবির সুমন জানান, নগদ এর আমরা অনেক অভিযোগ পেয়েছি। আমরা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
সম্প্রতি স্থানীয় এবং জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় গত সপ্তাহে এ ধরনের সংবাদ প্রকাশের পরও সংশ্লিষ্টদের টনক নড়েনি। ভুক্তভোগী অভিভাবকদের অভিযোগ উপবৃত্তি দেয়ার নামে এ ধরনের প্রতারণা বন্ধ না হওয়াটা রহস্যজনক।