খুলনার পাইকগাছায় কপিলমুনি বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে গণহারে পকেটমার হয়েছে। এক ‘ম্যারাথন পকেটমার’ এর ঘটনা ঘটেছে। মন্ত্রী বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে মাল্যদান সময় মাত্র ১৫-২০ মিনিটের ব্যবধানে ৬ জনের পকেট থেকে এক এক করে খোয়া যায় দামি মোবাইল ও মানিব্যাগ। প্রতিটি মানিব্যাগেই ছিল টাকা। ‘ম্যারাথন পকেটমার’ এর ঘটনাটি এলাকায় যেমন হাস্যরস সৃষ্টি করেছে তেমনি সাংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রী, স্থানীয় সংসদ সদস্য, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, আ.লীগের নেতাকর্মী, থানার ওসিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সামনে এমন ঘটনা ঘটায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে এলাকার মানুষ নানা মন্তব্য করছেন। এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পকেটমার ঘটনা অসংখ্য ব্যক্তি ভাইরাল করেছে। ২ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টায় কপিলমুনি বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন সাংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রী খালিদ হোসেন। এ সময় সেখানে সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু, পাইকগাছা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগম, ওসি জিয়াউর রহমান, কপিলমুনি ইউপি চেয়ারম্যান কওসার আলী জোয়ার্দার, লতা ইউপি চেয়ারম্যান কাজল কান্তি বিশ্বাস, উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম সম্পাদক আনন্দ মোহন বিশ্বাস, ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি যুগোল কিশোর দে ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন খোকনসহ দলীয় নেতাকর্মী ও সুধীজনরা উপস্থিত ছিলেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রী স্থান ত্যাগ করার পর কয়েকজন তাদের পকেটে হাত দিয়ে আক্কেলগুডুম হয়ে ওঠেন। স্বল্প সময়ের মধ্যে কপিলমুনি ইউনিয়ন আ.লীগ সভাপতি যুগোল কিশোর দে’র পকেট থেকে ১ হাজার ৮শ, স্থানীয় সাংবাদিক তপন পালের ৫ হাজার, ইউপি চেয়ারম্যান কওসার আলী জোয়ার্দ্দার ৯ হাজার টাকা পকেটমার হয়ে যায়। ওই সময়ই কপিলমুনি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক রাজু ও উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সমীরণ সাধুর মোবাইল ফোন খোয়া যায়। পরবর্তীতে ঘটনাস্থল ও এর আশপাশের স্থির চিত্র সংগ্রহ করে দেখা যায়, মাস্ক পরিহিত এক ব্যক্তি কপিলমুনি ইউনিয়ন আ.লীগ সভাপতি যুগোল কিশোর দে পকেটে হাত দিয়েছে। ছবিতে আ.লীগ নেতার পাশে যাদেরকে দেখা গেছে তাদের কারো মানিব্যাগ ও মোবাইলফোন উধাও হয়ে গেছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, পকেটমার এত সুকৌশল সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছে যে, সামনে দাঁড়ানো থানার ওসিও ঘুণাক্ষরে বুঝতে পারেননি যে পকেটেমার হচ্ছে। স্থানীয়রা তাদের প্রতিক্রিয়ায় ঘটনাটিকে ‘ম্যারাথন পকেটমার’ বলে অভিহিত করেছেন। ফেসবুকে পাইকগাছা নাগরিক অধিকার বাস্তবায়ন কমিটি প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি লেখেন, খুলনা জেলার পাইকগাছায় গতকালের সাংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রীর সভায় গণহারে পকেটমারের দায় কার? প্রয়োজীয় নিরাপত্তা ছিলো কি? প্রশ্ন এলাকাবাসীর। পাইকগাছা থানার ওসি জিয়াউর রহমান জিয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সর্বোচ্চ ১৫-২০ মিনিটের মধ্যে ঘটনাটি ঘটেছে। এত ভিড়ে পকেটমার হয়েছে যে, কেউ বুঝতে পারেনি। তিনি জানান, মুখে মাস্ক থাকায় তাৎক্ষণিক ব্যক্তিকে চেনা সম্ভব হয়নি। তবে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, অতি পেশাদার এই পকেটমারের বাড়ি ডুমুরিয়া উপজেলা এলাকায়। তাকে আটকে তৎপরতা শুরু হয়েছে।