খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদের বার বার নির্বাচিত গণমানুষের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ গাজী জাকির হোসেন চির নিদ্রায় শায়িত হলেন নিজ মাতৃভূমি দিঘলিয়ার মাটিতে।
বুধবার (৩ আগষ্ট) সকাল সাড়ে দশটায় বারাকপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে স্মরণকালের সবচেয়ে বিশাল জন উপস্থিতিতে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। আনুমানিক ১০ হাজার লোক উপস্থিত হয় এ জানাযার নামাজে। জানাযার পূর্বে মরহুমের মরদেহ বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদে রাখা হয়। সেখানে সবাই তাঁকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
বিশাল এ নামাজে জানাযায় উপস্থিত ছিলেন খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবদুস সালাম মূর্শেদী, খুলনা আওয়ামী লীগের জেলা সহ-সভাপতি শরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও রূপসা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন বাদশা, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান জামাল, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদীন রশিদী সুকর্ণ, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক এমএ রিয়াজ কচি, খুলনা যুবলীগের আহ্বায়ক শফিকুর রহমান পলাশ,
খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অসিত বরণ বিশ্বাস ও আবদুস সালাম, খাঁন নজরুল ইসলাম, দিঘলিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খান নজরুল ইসলাম, দিঘলিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ মারুফুল ইসলাম, দিঘলিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোল্লা আকরাম হোসেন, দিঘলিয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ আলী রেজা বাচা, খুলনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পারভেজ হাওলাদার, খুলনা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন, দিঘলিয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হায়দার আলী মোড়ল, গাজীরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোল্লা মফিজুর রহমান ঠান্ডু, সেনহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী জিয়াউর রহমান, বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম ফরিদ আকতার, যোগীপোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাজ্জাদুর রহমান লিংকন, আটরা গিলেতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ মনিরুল ইসলাম, সিদ্ধিপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আবুল কাশেম, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য ডাঃ সৈয়দ আবুল কাশেমসহ দিঘলিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল স্তরের নেতৃবৃন্দ, দিঘলিয়া উপজেলার বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক, শিক্ষক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ওই জানাজায় অংশগ্রহণ করেন। বারাকপুর ইউনিয়নের সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে।
গত ২ আগস্ট দিবাগত রাত ১১ টায় চেয়ারম্যান জাকির গাজীর মরদেহ ঢাকা থেকে পোস্ট মার্টেম শেষে বারাকপুর নিজ বাড়িতে পৌঁছালে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারনা হয়। মরহুম কে এক নজর দেখার জন্য হাজার মানুষের ঢল নামে মরহুমের বাড়িতে।
উল্লেখ্য গত ১২ই জুন গাজী জাকির হোসেন সঙ্গীয় লোক নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে বারাকপুরের আড়ুয়া এলাকার নিজ মাছের ঘেরের প্রয়োজনীয় কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে বোয়ালিয়ারচর নামক স্থানে এলে এলাকার একদল চিহ্নিত স্বশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে তাঁকে লোহার রড ও ধারালো ছুরি দিয়ে মারাতœক রক্তাক্ত জখম করে পার্শ্ববর্তী খালে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়। সন্ত্রাসীরা তাঁর দুই হাত ও দুই পা ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়।
এ ব্যাপারে লাখোহাটি গ্রামের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে এলাকায় আসলেও গাজী জাকির হোসেনের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে গা ঢাকা দিয়েছে। এদিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠন ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে। জানাযা পূর্ব বক্তব্যে খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান জামাল বলেন অনতি বিলম্বে গাজী জাকির হোসেনের উপর হামলার সাথে জড়িত সকল চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি সকল অপরাধীদের গ্রেফতার করার জন্য পুলিশের প্রতি আহবান জানান।
উল্লেখ্য ৫০ দিন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় বারাকপুরের গণমানুষের প্রাণপ্রিয় চেয়ারম্যান গাজী জাকির হোসেন গত ২ আগস্ট ঢাকার স্পেশালাইজড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মরহুমের জানাযা নামাজ শেষে বারাকপুর পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।