বগুড়ার গাবতলীতে যৌতুক না পেয়ে এক গৃহবধুকে নির্যাতনে হত্যার অভিযোগে স্বামীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এ ঘটনায় মৃত গৃহবধুর পিতা বাদী হয়ে গাবতলী মডেল থানায় স্বামীসহ ৩ জনের নামে মামলা দায়ের করেছে।
থানায় দয়েরকৃত মামলা থেকে জানাগেছে, গাবতলী উপজেলার বালিয়াদিঘী ইউনিয়নের তল্লাতলা গ্রামের পিতামৃত মজিবর রহমান আকন্দ’র ছেলে মোঃ আনোয়ার হোসেন আকন্দ বাদী হয়ে এজাহারে উল্লেখ করেছেন, বাদী একজন দিনমজুর, শ্রমিকের কাজ করেন, ২০১৬ সালে ইসলামি শরা শরয়িত মতে তার মেয়ে মীম আকতার (২৫)’র সাথে একই উপজেলা কালাইহাটা পশ্চিমপাড়া গ্রামের আবদুল করিম মন্ডলের ছেলে মোঃ ইব্রাহীর আলী মন্ডলের সাথে বিাবাহ দেয়। তিা আনোয়ার হোসেন, মেয়ে মীম আকতারের সুখের কথা চিন্তা করে প্রথমে ৭৫ হাজার ও পরে আরো ৩০ হাজার টাকা যৌতুক দেয়। তাদের সংসার জীবনে মিজান (৪) ও আঃ সোবাহান (৬ মাসের) ২ ছেলের জন্ম হয়। তার পরেও স্বামী ইব্রাহীম যৌতুকের জন্য স্ত্রী মীমকে চাপ প্রয়োগসহ শরীরিক ও মানষিক নির্যাতন করতে থাকে।
স্বামী ইব্রাহিম আলী মন্ডল ব্যবসা করার জন্য, আবারো শ্বরবাড়ী থেকে যৌতুকের টাকা এনে দেয়ার জন্য স্ত্রী মীমকে চাপ ও নির্যাতন করে। সে টাকা এনে দিতে না পারায় নির্যাতনের মাত্র আরো বেড়ে দেয়। ইব্রাহীম আলী গত পাঁচ মাস পূর্বে বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার কালিয়াহাতী গ্রামে স্ত্রী মীম এর অনুমতি ছাড়াই দ্বিতীয় বিবাহ করে। এ ঘটনায় মীম আকতার বগুড়া নারী ও শিশু নির্যাতন আইন দমন আদালতে একটি মামলা দয়ের করে। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
স্ত্রী মীম দুটি সন্তানের কথা চিন্তাকরে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের মধ্যস্থতায় চলতি আগস্ট ৪ স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে ইব্রাহীমসহ অন্যান্য আসামিরা মীম আকতারকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। পুনরায় এক লক্ষ টাকা যৌতুক এনে দেয়ার জন্য স্বামী ইব্রাহীম মন্ডল স্ত্রী মীম আকতারের উপর শরীরিক ও মানষিক নির্যাতন আরাম্ভ করে।
৭ আগস্ট দিনগত রাত সাড়ে ১২টায় স্বামী ইব্রাহিমসহ অন্যা আসামীদের সহযোগীতায় সু-কৌশলে মীমকে মেরে ঘরে আটক রাখে। ফোনে বাদীকে খবর দিয়ে জানায়, তার মেয়ে গুরুতর অসুস্থ তাকে হাসপাতালে নিতে হবে। সংবাদপেয়ে মীমের বাবা আনোয়ার হোসেন এসে স্বামী ইব্রাহীম মন্ডলসহ মীমকে চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (শজিমেক) নিয়ে যায়। সেখানে জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত ডাক্তার মীম আকতারকে মৃত ঘোষণা করে। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনার স্থানে গিয়ে লাশের সুরুত হাল রিপোর্ট তৈরী পুর্বক স্বামী ইব্রাহীম আলী মন্ডল (৩২) কে গ্রেফতার করে।
এ ঘটনায় মৃত মীম আকতারের পিতা আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে, জামাই ইব্রাহিম মন্ডলসহ একই গ্রামের করিম মন্ডল ও রেজাউল মন্ডলকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। মীমের লাশ ময়না তদন্তের জন্য বগুড়া মর্গে পাঠানো হয়েছে।
গাবতলী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ সিরাজুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মীমকে হত্যার অভিযোগ এনে পিতা আনোয়ার হোসেন আকন্দ বাদী হয়ে, জামাই ইব্রাহীম আলী মন্ডলসহ ৩ জনের নামে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। আসামি ইব্রাহিমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। আসামি ইব্রাহিম আলী মন্ডলকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।