খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খুলনা যুবলীগের সভাপতি মোঃ কামরুজ্জামান জামাল বলেছেন, বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রিয় চেয়ারম্যান ও দিঘলিয়া আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকির গাজী। তাঁর মৃত্যু স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। তাঁকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কারা জাকির গাজীকে হত্যা করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ভালো করেই জানেন। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, কেন তাদেরকে আইনের আওতায় আনছেন না? তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় তারপরও জাকির গাজীর হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আমাদের এখানে মানববন্ধন করতে হচ্ছে। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আমরা হাতে তুলে নিতে চাইনা। আমরা বিরোধী দলে থাকলে জাকির গাজীর হত্যাকারীদের ধরে এনে আইনের আওতায় আনতাম। কিন্তু আজকে আমাদের হাত পা বাঁধা। আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আছে যার কারণে। তিনি অনতিবিলম্বে জাকির গাজীর হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের জোর দাবি জানান।
তিনি গত সোমবার (৮ আগস্ট) খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা গাজী জাকির হোসেনের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে এসব কথা বলেন।
বারাকপুর ইউনিয়নবাসীর উদ্যোগে আয়োজিত এ মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খান নজরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মোল্লা আকরাম হোসেন, জেলা কৃষক লীগের সভাপতি অধ্যাপক আশরাফুজ্জামান বাবুল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শেখ মোঃ আবু হানিফ, সাধারণ সম্পাদক মোঃ আজিজুর রহমান রাসেল, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারহানা হালিম, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ পারভেজ আলম হাওলাদার, খানজাহান আলী থানা যুবলীগের আহ্বায়ক ও যোগীপোল ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সাজ্জাদুর রহমান লিংকন, দিঘলিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের প্রাক্তন সভাপতি মোঃ ফোরকান আহন্মেদ রনি, দিঘলিয়া উপজেলা এবং বারাকপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য যে, গত ১২ জুন সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে বারাকপুর ইউপি চেয়ারম্যান গাজী জাকির হোসেন মোটরসাইকেল যোগে আড়ুয়া থেকে বারাকপুর নিজস্ব বাড়ি ফেরার পথে বোয়ালিয়ারচর নামক স্থানে পৌঁছালে ৮/১০ সন্ত্রাসী তার গতিরোধ করে। এ সময় তারা গাজী জাকির হোসেনকে লোহার রড জিআই পাইপ দিয়ে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে পার্শ্ববর্তী খালে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে এলাকাবাসী তাঁকে উদ্ধার করে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়া হয় এবং সেখানে প্রথমে পঙ্গু হাসপাতাল ও পরে ঢাকা স্পেশালাইজ্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘ ৫০ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে গত ২ আগস্ট দিবাগত রাত ১ টায় রাজধানী ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন হলে বেশ কিছুদিন যাবৎ তিনি আইসিইউতে ছিলেন। গত ১ আগস্ট ভোর সাড়ে ৪টার দিকে তাঁর শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হলে সেই থেকে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। গাজী জাকির হোসেন ছিলেন আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথের পরীক্ষিত ও নিবেদিত নেতা। তিনিই বিগত ইউপি নির্বাচনে দিঘলিয়া উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নের মধ্যে একমাত্র নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন। এর আগেও তিনি ২ বার একই ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন।