নীলফামারীর সৈয়দপুরে রেলওয়ের ১৭ একর জমি ব্যক্তি মালিকানা সেজে বিক্রী করা হয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন মালিক সেজে তা বিক্রী করা হয়েছে অনেকের কাছে। সরকারী ওই সম্পত্তি কিভাবে ব্যক্তিমালা হল তা নিয়ে সচেতন মানুষের মধ্যে চলছে আলোচনা সমালোচনা। ওই জমির ভুয়া মালিক সাজানো হল। পরে তা রেকর্ড হল। দলিল করে তা বিক্রী করা হল। ক্রেতারা ওই জমিতে নির্মাণ করলো বহুতল ভবন। কেউ পাকা আবার কেউবা আধাপাকা বসতঘর তৈরী করে সেখানে শুরু করেছে পরিবার নিয়ে বসবাস। অথচ সৈয়দপুরে ছিল রেলওয়ে ভুসম্পত্তি অফিস। ছিল এখানে রেলওয়ে আমিন। নকশাকারক,রেল প্রশাসন। তাদের নাকের ডগায় তেল দিয়ে কারা ওই সকল সরকারী জমি নিজ নামে নিল। দায়িত্বে থাকা কর্তারা কেন বাঁধা দিল না। নাকি অর্থের কাছে তারা বিক্রী হয়ে গেল। এমন প্রশ্ন আজ অনেকের।
এরই মধ্যে ৩ আগস্ট রেলওয়ের ভুসম্পত্তি অফিস পার্বতীপুর থেকে রেলের বেহাত হওয়া ওই সকল সম্পত্তি মাপ জোক করতে আসেন রেলওয়ের নিয়োজিত সরকারী আমিন হিরেন্দ্র নাথ সরকার। সাথে ছিল রেলওয়ে প্রশাসনের প্রায় ৩০ জন সদস্য।
রেলওয়ের আমিন হিরেন্দ্র নাথ সরকার জানান,এটি হল বাঙ্গালীপুর ও নিয়ামতপুর এলাকা। এখানে রেলওয়ের ১৭ একর জমি রয়েছে। যার আনুমানিক বাজার মুল্য প্রায় শত কোটি টাকা। তিনি বলেন এখানে একসময় রেলওয়ের ভাটার ইট শুকানো হত। তাই এ এলাকাটির ডাক নাম ছিল ইটা খোলা। আর ওই জমির ভুয়া মালিক সেজে কতিপয় ব্যক্তি তা অনেকের কাছে বিক্রী করে গেছেন। ক্রেতারা ওই জমির ওপর কেউ কেউ ঘরবাড়ি নির্মাণ করে আছেন। আবার কেউ কেউ ক্রয় করে নিজেদের দখলে রেখেছেন।
তিনি বলেন সরকারী জায়গা উদ্ধারে আমরা মাঠে নেমেছি। রেলওয়ের জায়গা আমরা আজ মাপজোক করছি। কারা এ সরকারী জায়গা বিক্রী করছে আর কারা ক্রয় করছে তাদের তালিকা করছি। সময় হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে ওই জমির দখলদারদের পক্ষে কাজ করছে রেলওয়ে ভুসম্পত্তি বিভাগের কানোঙ্গো জিয়াউর রহমান জিয়া এমন অভিযোগ অনেকের। ওই কানোঙ্গো বর্তমানে দায়িত্বে আছেন পার্বতীপুর,সৈয়দপুর ও চিলাহাটির। তিনি প্রায় ৪ বছর থেকে একই স্থানে দায়িত্বে আছেন। সরকারী নিয়ম অনুযায়ী এক কর্মস্থলে দুই বছর থাকার নিয়ম থাকলেও তিনি পার করছেন ৪ বছর। দীর্ঘ সময় একই স্থানে কাজ করার ফলে তার পরিচিতি বেড়েছে।
রেলওয়ের জমিতে বসবাসকারীদের কাছ থেকে তিনি দালাল চক্রের মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। এক ব্যক্তি বলেন ওই জিয়া আমার কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা নিয়েছেন। দখলবাজদের মধ্যে আরও কয়েকজন জানান,লিজ দেয়ার কথা বলে কয়েকজন দালাল আমাদের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা নিয়েছে। সময় এলে আমরা তাদেরকে ধরে টাকা আদায় করে নেব।
এ বিষয়ে কানোঙ্গো জিয়াউর রহমান জিয়ার সাথে মোবাইলে কল করা হলে তিনি কল রিসিফ করেননি। ফলে তার মতামত নেয়া সম্ভব হয়নি।
তবে ইউনুস নামে একজন বলেন, স্যারের বিরুদ্ধে ওই সব মিথ্যা কথা রটানো হচ্ছে। স্যার ওই সকল ঘটনার সাথে জড়িত নেই।