রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানা (পূর্ব) আওয়ামী লীগের সভাপতি আতিকুর রহমান কালুকে ফিল্মি স্টাইলে গুলি করে হত্যার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে গ্রেপ্তারকৃত ব্যাংক কর্মকর্তা ও তার ব্যক্তিগত সহকারীকে দুইদিনের পুলিশ রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। বোয়ালিয়া থানা পুলিশের পক্ষ থেকে সাতদিনের রিমান্ড আবেদনের প্রেক্ষিতে বুধবার (১০ আগস্ট) সকালে রাজশাহী মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট-১ আদালতের বিচারক রেজাউল করিম এ আদেশ দেন।
এ তথ্য নিশ্চিত করে আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) মুসাব্বিরুল ইসলাম জানান, কেনো এ হামলা-তা জানতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেছিল। যার প্রেক্ষিতে বুধবার শুনানি শেষে আদালত দুইদিনের জন্য রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছেন। গ্রেপ্তারকৃত ব্যাংক কর্মকর্তা পরিচয়দাতা ওয়াহিদ মুরাদ জামিল ওরফে লিংকন (৫৬) এবং তার ব্যক্তিগত সহকারী সজল আলীকে (২৫) জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমেই তথ্য বের করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
এর আগে গত রোববার দিনগত রাত আনুমানিক সোয়া ১টার দিকে আওয়ামী লীগ নেতা কালুর বাড়িতে গিয়ে তাকে হত্যার উদ্যেশ্যে লক্ষ্য করে গ্রেপ্তারকৃতরা কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়লেও তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এরপর পালিয়ে যাওয়ার সময় এলাকায় আতঙ্ক ছড়াতে দুর্বৃত্তরা আরো তিন রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে। পরে জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯-এর কলের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ প্রশাসনের একাধিক টিম প্রায় তিন ঘন্টার শ্বাসরুদ্ধর অভিযান চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্রসহ তাদের গ্রেপ্তার করে। উদ্ধারকৃত আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে রয়েছে একটি অত্যাধুনিক শটগান, ৮৭ রাউন্ড শটগানের তাজা কার্তুজ, ১৩টি খোসা, একটি অত্যাধুনিক বিদেশী পিস্তল, ওই পিস্তলের ৩১ রাউন্ড তাজা গুলি ও ব্যবহৃত ৬টি গুলির খোসা এবং তিনটি ম্যাগজিন। এছাড়াও তাদের বহনকৃত কালো রংয়ের একটি প্রাইভেট কারও জব্দ করা হয়। কিন্তু গ্রেপ্তারের পর তারা আতিকুর রহমান কালুকে কেন হত্যার চেষ্টা করেছিল তার উত্তর দেননি। যে কারণে ঘটনার কারণ সম্পর্কে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের রিমান্ড আবেদনের প্রেক্ষিতে বুধবার দুইদিনের পুলিশ রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।
গ্রেপ্তার ওয়াহিদ লিংকন রাজশাহী নগরীর উপশহরীর তিন নম্বর সেক্টরের চার নম্বর সড়কের ১৭৭ নম্বর বাসার চারতলার নিজের ফ্ল্যাটে থাকেন। গ্রেপ্তারের পর তিনি নিজেকে এভারেস্ট হোমস লিমিটেড নামে একটি ডেভেলপার কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব থাকার কথা পুলিশকে জানিয়েছেন। এছাড়াও তিনি একটি বেসরকারি ব্যাংকের এমডি পদেও দায়িত্ব পালন করেন বলেও জানিয়েছেন। তবে আতিকুর রহমান কালুর সাথে গ্রেপ্তারকৃতের কোনো পরিচয় নেই বলেও উভয়ই দাবি করেছেন। কিন্তু কেন হত্যা করতে চেয়েছিলেন তার কোন উত্তর দেননি গ্রেপ্তারকৃতরা। যে কারণে রিমান্ডে আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই হামলার কারণ উৎঘাটন করা হবে বলে জানিয়েছেন বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাজহারুল ইসলাম।