দিরাইয়ে সুদের ব্যবসায় জমজমাট বহুকাল থেকেই। প্রচলিত রয়েছে দিরাই উপজেরা সদরে যে উঁচু উঁচু বাড়ীগুলো রয়েছে তার অধিকাংশই সুদের টাকার বাড়ী। সুদের ব্যবসা করে অনেকেই হয়েছেন দানবীর, জনপ্রতিনিধি বা রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা। এবার অভিযোগ উঠেছে এ লাভজনক ব্যবসায় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও নেমেছেন।
দিরাই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা একসময় চেকের ব্যবসা করতেন। সে সময় অধিকাংশ শিক্ষকই নিজের কর্মস্থ বিদ্যালয়ের আশপাশে থাকতেন। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল না হওয়ায় দিরাই উপজেলা সদরে আনা কষ্টসাধ্য ছিল। সে সুযোগে ধনাঠ্য শিক্ষকরা বা কিছু ব্যবসায়ী গ্রামগঞ্জের শিক্ষকদের চেক রেখে অগ্রিম টাকা দিয়ে দিতেন তার বিনিময়ে কিছু টাকা বেশী নিতেন। এখন দিরাই উপজেলা একমাত্র রফিনগর ইউনিয়ন ব্যতীত সকল ইউনিয়নের অধিকাংশ শিক্ষক উপজেলা সদরে পরিবার নিয়ে বসবাস করায় চেকের ব্যবসা মান্ধা হয়েছে সে সুযোগে শিক্ষকরা নেমেছেন সুদের ব্যবসায়।
সুদের ব্যবসার অভিযোগ উঠেছে উপজেলার করিমপুর ইউনিয়নের চানপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রঞ্জিত দাস রন এর বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ডলি বেগম দিরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে গত ১০ আগস্ট একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন রঞ্জিত দাসের ছাত্রী ডলি বেগম তিনি দিরাই পৌর সদরের রাধানগর গ্রামের আনছার মিয়ার স্ত্রী।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, ইউনিয়নের চানপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রঞ্জিত দাস রন এর কাছ থেকে ডলে বেগম শতকরা ১৫ টাক মাসিক সুদে ৫০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। ঋণ গ্রহনের পর থেকেই তিনি মানে সাত হাজার পাঁচ শত টাকা করে শিক্ষক রঞ্জিত দাসকে দিয়ে আসছেন। গত তিন বছরে সুদ হিসে শিক্ষককে ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এখন আরো দুই লক্ষ টাকা দাবি করা হচ্ছে। গত ৫-৬ মাস যাবত সুদের টাকা দিতে না পারায় শিক্ষক বিভিন্ন ধরনের হুমকি দামকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযোগ কারী ডলি বেগম বলেন, আমার একটা সুন্দর সংসার ছিল আমার স্বামী ও পিতা প্রবাসী। আমার স্বামী সৌদি আরব থেকে দুর্ঘটনায় হাত ভেঙ্গে দেশে আসলে আমার সংসারে অভাব দেখা দেয়। আমি টুক দিরাই গ্রামের জয়তুন নেছা যিনি খেলার মা হিসেবে পরিচিত তার মাধ্যমে আমার শিক্ষকের কাছ থেকে সুদে ৫০ হাজার টাকা গ্রহণ করতে গেলে আমার মাকে জামিন হিসেবে চাওয়া হয় এরপর আমার মা সহ স্যারের কাছ থেকে টাকা গ্রহণ করি। আমি নিয়মিত সুদ পরিশোধ করছিলাম স্যার কিছু বলেননি। এ ঋণের সুদ দিতে গিয়ে আমি নতুন নতুন ঋণ করতে থাকি ফলে আমার পক্ষে আর সুদ দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না তাই স্যার আমাকে বিভিন্ন মাধ্যমে হুমক দিমকি দিচ্ছেন আমার বাবার বাড়ীতে গিয়ে তিনি মার সাথে খারাপ আচরণ করেছেন। এসব দেখে আমার বাবা তাকে ৩০ হাজার টাকা দিয়েছেন। স্যারের কারণে আমার বাচ্ছাকে কোন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করতে পারিনি। বর্তমানে আমি সিলেটে বাবাসায় বাসায় কাজ করে সংসার চালাচ্ছি।
অভিযুক্ত শিক্ষক রঞ্জিত দাস জানান, ডলি বেগমের কাছে আমি কোন টাকা পয়সা পাইনা। তার মা আমার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছেন তার বাবা দেশে এসে আমার সে ঋণ পরিশোধ করেছেন।