খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার দক্ষিণ দিঘলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমিতে শিক্ষার্থীদের খেলার সামগ্রী স্থাপনে বাধা দিয়েছে অবৈধ দখলদাররা। এমনকি তারা স্কুলের প্রধান শিক্ষককে দেখে নেওয়ারও হুমকি দিয়েছেন। ঘটনায় পরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সিদ্দিকুর রহমান শনিবার দিঘলিয়া থানায় জিডি করেছেন। জিডিতে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও উল্লেখ করেন।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়, উপজেলার ৭নং দক্ষিণ দিঘলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমিতে শিক্ষার্থীদের জন্য দেড় লক্ষাধিক টাকার খেলা-ধূলার সামগ্রী (প্লেয়ার এক্সেসরিজ) স্থাপন করতে গেলে স্থানীয় খান আক্তারুজ্জামান, খান আসাদুজ্জামান, খান বাদল হোসেন ও খান মোস্তাফিজুর রহমান নামে চারব্যক্তি ওই জমির মালিকানা দাবী করে তাদের খেলার সামগ্রী স্থাপনে বাধা দেন। এ ঘটনায় তিনি ম্যানেজিং কমিটি এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খান নজরুল ইসলাম ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হায়দার আলী মোড়লসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের বিষয়টি অবহিত করেন। তাদের পরামর্শে গত ২৩ জুলাই বিদ্যালয়ে সভা করা হয়। সভায় ম্যানেজিং কমিটির সদস্যবর্গ, অভিভাবকসহ ২ শতাধিক লোকজন উপস্থিত হন। সভায় বাধা প্রদানকারীরা স্কুলের জমিতে খেলা-ধূলার সামগ্রী স্থাপনে সম্মত হন। সে মোতাবেক গত ৬ আগস্ট সেখানে খেলা-ধূলার সামগ্রী স্থাপন করতে গেলে উল্লিখিত ব্যক্তিবর্গ পূণরায় বাধা প্রদান করে। এমনকি ওই জমির মালিকানার দাবীদার নিলুফা ইয়াসমিন তার ভাইদের নিয়ে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি খান নজরুল ইসলাম ও ইউপি চেয়ারম্যান হায়দার আলী মোড়লসহ ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এমনকি গণ্যমান্য ব্যক্তিরা চলে গেলে জমির মালিকানা দাবিদাররা স্কুলের অফিস কক্ষে প্রবেশ করে প্রধান শিক্ষক মো. সিদ্দিকুর রহমানকে উচ্চৈঃস্বরে হুমকি দেন এবং মামলায় জড়িয়ে বিভিন্নভাবে দেখে নেবেন বলেও হুমকি-ধামকি প্রদর্শন করেন। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষক মো.সিদ্দিকুর রহমান উল্লিখিত মৃত খান আবতাব আহম্মেদের ৪ পুত্র ও এককন্যার বিরুদ্ধে থানায় জিডি করেন।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমি দক্ষিণ দিঘলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বে আছি। স্কুলের সম্পত্তি অবৈধভাবে একটি মহল জবর দখল করে অবৈধ স্থাপনা তৈরি করেছে। অথচ: স্কুলের শিশুরা জায়গার অভাবে খেলাধুলা করতে পারে না। স্কুলের জায়গা উদ্ধার করতে গেলে বিভিন্ন হুমকি ধামকি আসে। এ কারণে আমি নিরাপত্তার জন্য দিঘলিয়া থানায় একটা জিডি করেছি। আমি যতদিন স্কুলে আছি ততদিন স্কুলের সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাবো। স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি খান জিয়াউল হক সোহাগ বলেন, স্কুলের সম্পত্তির উপর অবৈধভাবে চারটি পাকা দোকান ঘর তৈরি করা হয়েছে। একারণে বিষয়টি নিয়ে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। দিঘলিয়া থানার ডিউটি অফিসার মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন প্রধান শিক্ষকের জিডির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, দিঘলিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন।