শার্শার বাগআঁচড়ার চেয়ারম্যান আবদুল খালেকসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, মারপিট, চেক ও স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়ার অভিযোগে যশোর আদালতে দুইটি মামলা হয়েছে। রোববার রাতে শার্শার সাতমাইল গ্রামের আবদুর রাজ্জাক ও সোনাতনকাটি গ্রামের মনিরুজ্জামান বাদী হয়ে এ মামলা করেছেন। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আরমান হোসেন অভিযোগ দুইটির তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়ার আদেশ দিয়েছেন শার্শা থানার ওসিকে।
আসামিরা হলো, সোনাতনকাটি গ্রামের মৃত দ্বীন আলী মোড়লের ছেলে বাগআঁচড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল খালেক, উলাসী গ্রামের রেজাউল ইসলামের ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন, মহিষা গ্রামের রাসেল সরদারের ছেলে লুকমান সরদার, সোনাতনকাটি গ্রামের গণি মোল্যার ছেলে আনোয়ার আলী ও হাসান আলীর স্ত্রী ফুলসিরাত বেগম।
আব্দুর রাজ্জাকের অভিযোগ জানা গেছে, তিনি জাহাঙ্গীর হোসেনের সাথে গরুর ব্যবসা করতেন। করোনার কারণে ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। জাহাঙ্গীর হোসেন তার কাছে ৩০ হাজার টাকা পেত। ২০২১ সালে তিনি ১৫ হাজার টাকা দিয়ে বাকি টাকা দিতে পারবেনা বলে মাফ চেয়ে বিষয়টি মিটিয়ে নেন। চলতি বছরের ৩০ জুলাই আবদুর রাজ্জাক চেয়ারম্যান স্বাক্ষরিত একটি নোটিশ পান। ১ আগস্ট নোটিশের ধার্য দিনে তিনি ইউপি কার্যলয়ে যান। এ সময় তিনি কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই নৌকার পক্ষে ভোট করায় চেয়ারম্যান আবদুল খালেক মারপিট শুরু করেন। চেয়ারম্যান কোমর থেকে পিস্তল বের করে ফোন ধরিয়ে দিয়ে বাড়ি থেকে চেক বই নিয়ে আসতে। এরপর একটি কক্ষে আটকে রেখে চেক বই বাড়ি থেকে নিয়ে আসলে চেকের একটি ফাঁকা পাতায় ও তিনটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেন। পরবর্তীতে তিনি কাউকে কিছু না বলার হুমকি দিয়ে ইউপি কার্যালয় থেকে তাড়িয়ে দেন।
অপর দিকে মনিরুজ্জামানের অভিযোগে জানা গেছে, আসামি ফুলসিরাত বেগম ও লুকমান সরদার মানবপাচার দলের সদস্য। মনিরুজ্জামানের মেয়েকে ভারতে পাচারের সময় প্রশাসন ও জনগণের সহায়তায় উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে মনিরুজ্জামানের স্ত্রী আদালতে মানবপাচার দমন আইনে একটি মামলা করেন। এতে ফুলসিরাত ও লুকমান সরদার তাদের উপর চরম ভাবে ক্ষিপ্ত হয়। ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল খালেক স্বাক্ষরিত একটি নোটিশ পেয়ে গত ১৮ জুলাই তার কার্যালয়ে যান। এ সময় চেয়ারম্যান আব্দূল খালেক অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মনিরুজ্জামানকে মারপিট ও ৪ টি ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেন। এ ব্যাপারে কাউকে কিছু বললে খুন-জখম করবে বলে হুমকি দিয়ে তিনি তাড়িয়ে দেন।
উভয় ঘটনার ব্যাপারে থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ তা গ্রহণ না করায় তারা আদালতে এ মামলা করেছেন।