শেরপুরের নালিতাবাড়ীর কালিনগর মহল্লায় গত ২৯ জুলাই রাত সাড়ে ৯টার দিকে খুন হন দিতি বেগম (১৮) নামের এক নববধূ। দিতি পৌরশহরের কালিনগর মহল্লার চাতাল শ্রমিক মো. মুছা মিয়ার মেয়ে। এ ঘটনায় রাতেই অভিযুক্ত যুবক রহুল আমিন (২৫) কে গ্রেপ্তার করে থানা পুলিশ। তবে এই খুনের ঘটনায় সহযোগী হিসেবে অভিযুক্তের ভাবি মেলা বেগমকে আসামি করার দাবী জানিয়েছেন নিহতের পরিবার। সম্প্রতি প্রেসক্লাব নালিতাবাড়ীর সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এসব দাবী জানায় নিহতের পরিবার।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নিহত দিতির পিতা মুছা মিয়া বলেন, গত ২৯ জুন রাত সাড়ে ৯ টায় প্রতিবেশি রহুল আমিনের ভাবী মেলা বেগম দিতিকে তার বাড়ীতে গিয়ে ডোকে এবং ঘরের দরজা খুলে দিতে বলে। এতরাতে প্রতিবেশী মহিলার ডাকে দিতি ঘরের দরজা খুলে দেয়। দরজা খুলে দিতেই প্রতিবেশি মাদকাসক্ত রহুল আমীন ঘরে ঢুকে দিতির মাথায় দা দিয়ে কোপ বসায়। এতে রাতেই দিতি মারা যায় বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। তিনি আরোও বলেন, ওই রাতেই রহুল আমীন ও তার ভাবী মেলাকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেলেও পরদিন মেলাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। ওই সময় মেলা না ডাকলে দিতি ঘরের দরজা খুলতো না। তাহলে আমার মেয়েটাও আজ জীবিত থাকতো। তাই আমার মেয়েকে খুন করায় সহযোগী হিসেবে আমরা ওই মহিলার শাস্তি চাই। পুলিশ যেনো ওই মহিলাকেও আসামি করে এটা আমাদের দাবী। একমাত্র মেয়েটাকে হারিয়েছি। এখন উপযুক্ত বিচার না হলে বাবা হয়ে বেঁচে থেকেও নিজেকে মৃত মনে হবে।
এদিকে পুলিশ ও এলাকাবাসী নিহতের পিতা জানায়, দিতির সঙ্গে গত ২৩ জুন উপজেলার চেল্লাখালী গ্রামের খায়রুল ইসলামের (২৬) বিয়ে হয়। খায়রুল কাজের সুবাদে রাজধানীর ডেমরায় বসবাস করেন। গত ঈদুল আজহার পর দিতিকে তুলে নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রতিবেশী রহুল দিতিকে ভালোবাসতেন। দিতিকে বিয়ে করতে না পেয়ে ভয়ানক পরিকল্পনা করেন তিনি। ২৯ জুন রাতে রহুল মাদক সেবন করে ঘর থেকে দা নিয়ে বাইরে বেরিয়ে পড়েন। রহুলের ভাবী মেলা দিতিকে ডাকলে দিতি ঘরের দরজা খুলে দেয়। ঘরে ঢুকে দিতির মাথায় দা দিয়ে কোপ দেয়। এ সময় দিতির মা চিৎকার দিলে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। তবে এর আগেই রহুল ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। পরে ওই রাতেই সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য দিতিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে দিতি মারা যান।
এ বিষয়ে বিদায়ী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বছির আহমেদ বাদল জানান, এই মামলার তদন্ত চলছে। দোষীরা অবশ্যই শাস্তি পাবে। তদন্তে কাউকে দোষী পাওয়া গেলে মূল চার্জশিটে তাঁর নাম অর্ন্তভুক্ত করা হবে।