জমি দখল করে রাস্তায় বাঁশের বেড়া দেওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছে লালমনিহাট সদর উপজেলার রাজপুর ইউনিয়নের মধুরাম ফকিরটারী গ্রামের বেশ কয়েকটি পরিবার। প্রতিপক্ষ সামছুল হক নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। জমি দখল করতে এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তারা। বিষয়টি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদসহ লালমনিরহাট সদর থানায় লিখিত করেছেন ভুক্তভোগীরা। এ কারণে ছয়দিন থেকে চলাচলে চরম সমস্যায় পড়েছেন তারা।
সরেজমিন জানা গেছে, সদর উপজেলার রাজপুর ইউনিয়নের মধুরাম ফকিরটারী গ্রামের মোঃ মোজাফ্ফর হোসেন মাস্টার তার বাপ দাদার পৈত্রিক জায়গায় বাড়ি করিয়া দির্ঘদিন ধরে তারা চাচাতো ভাইয়েরাসহ ভোগদখল করিয়া আসিতেছেন। কিন্তু সামছুল হক নামে এক প্রভাবশালী ব্যাক্তি বেশ কিছুদিন ধরে তাদের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করিয়া তাদের বাড়ি ভিটার জায়গা বেদখল করে নেয়ার অপচেষ্টা করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রভাবশালী সামছুল হক গত ১৮ আগস্ট দুপুরের দিকে বাড়িতে কোন পুরুষ মানুষ না থাকার সুযোগে তাদের বাড়ি হতে বাহিরে যাওয়ার যাতায়াতের রাস্তায় বাঁশের বেড়া দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেয় এবং তাদের বাড়ির উঠান দখল করে নেন।
এ সময় বাড়িতে থাকা মহিলারা তাদের চলাচলের রাস্তায় বেড়া দিতে বাঁধা দিলে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসী বাহিনী তাদেরকে মেরে ফেলার হুমকী দেয়। তাই ভয়ে কোন মহিলা কিছুই করতে পারে না। পরে ঙোবাইলে বিষয়টি তাদের স্বামীকে বললে তারা বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করলে সন্ত্রাসীরা তাদের পথ রোধ করে বিভিন্ন ভয়ভিতি দেখায়। একারনে মোজাফ্ফর মাস্টারসহ গ্রামের গণ্যমান্য ব্যাক্তি ও ইউপি সদস্যকে অবগত করেন। তারা বিষয়টি মিমাংসার জন্য গেলে তাদেরকেও প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীরা ভাগিয়ে দেন। পরে বাধ্য হয়ে মোজাফ্ফর মাস্টার বাদি হয়ে সামছুল হককে প্রধান আসামি করে লালমনিরহাট সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে মোজাফ্ফর হোসেন মাস্টার বলেন, সামছুল এলাকার একজন প্রভাবশালী ও পয়সা ওয়ালা মানুষ। এখানে তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পায় না। তার ছেলে একজন সেনাবাহিনীতে চাকুরী করেন বলে তিনি আইনের কোন তোয়াক্কা করেন না। সামছুল এবং তার সন্ত্রাসী বাহিনীর ভয়ে অনেকদিন তিনি তার বাড়িতেও আসগে পারেননি। অন্যের বাড়িতে রাত কাটাতে হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই সামছুল ২০১১ সালে গরীব অসহায় মানুষের ত্রানের টিন আত্মসাৎ করার অপরাধে দুইমাস কারাভোগও করেছিলেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সামছুল হকের নিকট জানতে চাইলে তিনি বাঁশের বেড়া দেয়া জমি তাদের দাবি করে বলেন, কাগজমূলে তারা জমির মালিক। রাস্তাটি আমাদের পৈতৃক জমি। আমরা আমাদের জমি দখল করেছি। আমরা কাউকে বাঁধা দেইনি। মোজাফ্ফররা জোর করে অনেকদিন ধরে তাদের জমি দখলে রেখেছিলেন। এখন আর তাদের ওই জমির উপর দিয়ে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হবে না।
নাম প্রকাশ না করার সর্তে ওই গ্রামের একাধিক ব্যাক্তি জানান, প্রায় ২০ বছর ধরে এলাকার লোকজন এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। হঠাৎ দেখি সামছুল হক রাস্তার মাঝে বেড়া দিয়ে চলাচলের বাঁধা দিচ্ছেন।
লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ এরশাদুল আলম জানান, রাস্তায় বেড়া দিয়ে চলাচলের বাঁধা ও জমি সংক্রান্ত বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করতে এসআইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।