পুঠিয়ায় ধান লাগানো মৌসুমে কৃত্রিম সার সংকট দেখা দিয়েছে। বেশি দাম দিলে, খুচরা ডিলারদের নিকট সার পাওয়া যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের গাফিলতির এবং বিসিআইসি ডিলার যোগসাজশে খুচরা ডিলারা দ্বিগুন দামে সার বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে বিসিআইসি সার ডিলার রয়েছে আটটি। এর মধ্যে, পুঠিয়া সদর ইউপি ও পৌরসভা মিলে দুইটি,শিলমাড়িয়া ইউপিতে বেশি ফসলী জমি থাকায় দু’টি ডিলার এবং বিএডিসি সার ডিলার রয়েছে পাঁচটি। ছয়টি ইউপি এলাকায় সাব-ডিলার খুচরা বিক্রেতা রয়েছে ৩৫টি। এখন ধান লাগানোর মৌসুম চলছে। সার সঠিক সময়ে, ঠিকমত না পেয়ে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। কৃষকদের অভিযোগ, সার ডিলারা যুদ্ধের অজুহাত দেখায়ে,সব রকম সারের কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছে। অবশ্য বেশি টাকা দিলে, সবরকম সার খোলা বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি কৃত্রিম সংকট দেখা দিয়েছে পটাশ সারের। পটশ সারের সরকারি মূল্য ৭৫০ টাকা। কিন্তু খুচরা সাব ডিলারা তা বিক্রি করছে, এক হাজার পাচশত হতে এক হাজার আটশত টাকা করে। সরকারি দামের এক হাজার একশত টাকা দামের টিএসপি সার খুচরা বিক্রি হচ্ছে, এক হাজার আটশত টাকা দর পর্যন্ত। বিসিআইসি এক ডিলার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণে,বিসিআইি ডিলারা বেশিদামে গোপনে সাব-ডিলারদের নিকট খুব তাড়াতাড়ি সারগুলি বিক্রি করে দিচ্ছেন। তারপর, খুচরা বিক্রেতারা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দ্বিগুন দামে বাজারে সার বিক্রি করছে। ছইমুদ্দিন নামের এক কৃষক বলেন, আগে বিসিআইি ডিলারা সরাসরি আমাদের নিকট সার বিক্রি করত। কিন্তু বর্তমানে আমাদের নিকট সার বিক্রি করছে না। তারা বেশি লাভের জন্য, খুচরা ডিলারদের নিকট সার বিক্রি করছে। কারণ, কৃষকদের নিকট বেশি দামে সার বিক্রি করলে,তাদের গোপনিয়তা নষ্ট হয়ে যাবে। ভালুকগাছি ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামের সাব্বির হোসেন বলেন,আমি পাচ বিঘা জমিতে এ বছর ধান লাগানো ইচ্ছে ছিল। কিন্তু সার সংকট দেখা দেওয়ায়, নিজের খাওয়ার জন্য, মাত্র দুই বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছি। আমার মতো উপজেলার বেশিরভাগ ধান চাষিরাই শুধুমাত্র সারের কারণে,ধান কম লাগাচ্ছেন। আবুল হোসেন নামের বেলপুকুর ইউনিয়নের কৃষক বলেন,উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা সঠিকভাবে সারের বিষয়টি দেখভাল করলে, এত সার সংকট দেখা দিতো না। শাওন নামের কান্দ্রা গুচ্ছেুা গ্রামের মাছ চাষি বলেন, টিএসপি সার সংকটের কারণে, মাছ করতে পাচ্ছি না। পুকুরে টিএসটি সার না দিলে পুকুরের পানিতে খাবার উৎপাদন হয় না। পুঠিয়ায় এক মন্ত্রনালয়ের কথিত সচিব নাম ভাঙ্গায়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে, পুঠিয়াসহ পার্শ্ববতী উপজেলা বিসিআইসি ডিলারদের নিকট প্রশাসনিক হয়ভীতি দেখায়ে,তার বাড়িতে শতাধিক বস্তা বিভিন্ন রকম সার মজুদ করে রেখেছেন বলে একটি সূত্র জানায়। এলাকার সাধারণ কৃষকরা ধান চাষ করার জন্য সার পাচ্ছেন না। কিন্তু তার বাড়িতে ব্যাপক সার দেখে,এলাকার কৃষকরা সরকারের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামসুনাহার ভূঁইয়া যুগান্তরকে বলেন, পুঠিয়ায় পটাশ সার বাদে কোনো সারের সংকট নেই। পটাশের চাহিদা আছে। কিন্তু বর্তমানে রাজশাহীর বিএডিসির ডিপুতে পটাশ নেই। টিএসপি সার সংকটের ব্যাপারে বললে তিনি বলেন,এই সারের এখন প্রয়োজন নেই।