ঢাকার হাতিরঝিলের পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হওয়া যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য্যরে ছেলের মৃত্যু রহস্য অবশেষে উদঘাটন হয়েছে। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে সাবেক ভিসির স্ত্রী মামলা করলেও পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ, মোবাইল ফোনের কললিস্ট, লোকেশনসহ সিসিআইডির গোপন তদন্তে উদঘাটিত হয়েছে আবীরের মৃত্যু রহস্য।
ঘটনার বিবরণে জানাযায়, গত ২৪/১১/২০২০ইং তারিখ রাতে ঢাকার হাতিরঝিলের পানিতে ডুবে মারা যায় যশোরের মনিরামপুর উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের প্রফেসর আবদুস সাত্তারের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে ওয়াসেক সাত্তার আবীর। এই মৃত্যুকে রহস্যজনক মৃত্যু হিসেবে মিডিয়ায় প্রচার করা হয়। এরপর আবীরের মা নাসিমা আক্তার বাদি হয়ে ১০/১২/২০ইং তারিখে ঢাকার চীফ পেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দুই জনের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞানামা ব্যক্তিদের আসামি করে পরিকল্পিত হত্যা মামলা দায়ের পূর্বক সন্তান হত্যার বিচার চেয়ে যশোর প্রেসক্লাবে কাঁন্নাকাটির পর সর্বত্র তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
মামলায় যে দু'জনকে আসামি করা হয় তারা হলেন নাসিমা আক্তারের আপন দেবর ফজলুর রহমানের ছেলে নয়ন এবং ফজলুর রহমানের জামাই মুরাদ। এদিকে, আদালতের নির্দেশে মামলাটি প্রথমে তদন্ত শুরু ঢাকা সিআইডি'তে কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক মাহমুদুর রহমান। কিন্তু বাদি নাসিমা আক্তার ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করায় অত্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হয় এবং ২৪/০৬/২০২১ইং তারিখে ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিযুক্ত করা হয় ঢাকা মেট্রো (দক্ষিন) সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মোঃ মামুনুর রশীদ। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ১৮/১১/২১ইং তারিখে ওই তদন্তকারী কর্মকর্তা চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মহানগর আদালত- ২১ বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
সেই প্রতিবেদনে ময়না তদন্তের রিপোর্টে আত্মহত্যা, বাদির দেয়া স্বাক্ষী, হাতিরঝিলের আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ জব্দ পূর্বক সেটা পর্যালোচনা এবং সিআইডির গোপন তদন্তে জানতে পারেন মেয়েলী ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবীরকে প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি করেন তার মা নাসিমা আক্তার। এজন্য মায়ের চাপেই আবীর আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়।
এমন প্রতিবেদন দাখিলের পর সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারক ১৭/০৫/২২ইং তারিখে মামলাটি খারিজ করে দেন। তবে, ওই আদালত থেকে মামলাটি খারিজ করায় বাদি নাসিমা আক্তার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে ফৌজদারি রিভিশন মামলা করলে বিজ্ঞ বিচারক রিভিশন মামলাটি আমলে নিয়ে মামলাটির পূণঃ বিচারের প্রার্থনা কেন মঞ্জুর করা হবেনা জানতে চেয়ে আসামি দুজনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে এবং ২৫শে আগস্ট এই কারণ দর্শাতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।