রাজধানীর বড়মগবাজার আইডিয়াল স্কুল এ- কলেজের কর্মজীবী মহিলা হোস্টেলের সুপার ইতি আফরিন শম্পাকে নিজ কক্ষে হত্যা করে মৃত্যুদেহ ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ করেছেন তার পরিবার।
ঘটনার আড়াই মাস পেরিয়ে গেলেও ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এমনকি মামলার তদন্তও ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন নিহতের স্বজনরা। বুধবার বেলা সকাল সাড়ে ১১টায় শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবে পরিবারের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন নিহতের বাবা আবু ছালেক মাস্টার।
সংবাদ সম্মেলনে হত্যাকান্ডের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক অপরাধীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করা হয়। নিহত ইতি আফরিন শম্পা জেলার বানারীপাড়া উপজেলার চাখার ইউনিয়নের চাউলাকাঠি গ্রামের আবু ছালেক মাস্টারের ছোট মেয়ে। চলতি বছরের গত ৭ জুলাই বিকেলে বড়মগবাজার আইডিয়াল স্কুল এ- কলেজের কর্মজীবী মহিলা হোস্টেলের ষষ্ট তলার ৬০৩ নম্বর কক্ষ থেকে ইতির ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নিহতের বাবা আবু ছালেক মাস্টার বলেন, ২০২১ সালের ১ সেপ্টেম্বর ইতি আফরিন শম্পা ঢাকার বড়মগবাজার আইডিয়াল স্কুল এ- কলেজের ছাত্রী নিবাসের সুপার হিসেবে যোগদান করেন। তার চাচাতো বোন একই স্কুলে শিক্ষক পদে চাকরি করার সুবাধে দুইজনেই হোস্টেলের ষষ্ট তলার ৬০৩ নম্বর কক্ষে থাকতো।
নিহতের বাবা অভিযোগ করে বলেন, ঈদের ছুটিতে সবাই যখন বাড়ি চলে যায় শম্পাও ঘটনার দুইদিন আগে বাড়ি ফিরতে চেয়েছিল। এজন্য সে ঢাকার সদরঘাটেও এসেছিল কিন্তু কোন একজনের ফোন পেয়ে সে বরিশালে না এসে হোস্টেলে ফিরে যায়। শম্পা ওইদিনই বিষয়টি আমাদের মোবাইলফোনে জানিয়েছিলো। কিন্তু কে তাকে ফোন করে সে বিষয়টি জানায়নি। এরপরেই তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহতের বাবা আবু ছালেক মাস্টারের দাবি, শম্পার চাচাতো বোন মাহফুজা ও হোস্টেলের কেয়ারটেকার হারুন হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকতে পারে। তাই তাদের গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে ঘটনার মূল রহস্য বেরিয়ে আসবে বলেও তারা উল্লেখ করেন। অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে নিহতের বাবা ছাড়াও ইতি আফরিন শম্পার মা লাভলী ইয়াসমিন শেফালী, বড় ভাই সাইফুল ইসলাম এবং ভাগ্নি অনন্যা ইয়াসমিন বৃষ্টি উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে অপমৃত্যু মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রমনা মডেল থানার উপপরিদর্শক নারায়ন সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইল ফোনে সাংবাদিকদের বলেন, শম্পার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এখন পর্যন্ত আমাদের হাতে আসেনি। তাছাড়া জব্দকৃত তার মোবাইল ফোন দুটি নিয়ে সিআইডি বিভাগ তদন্ত করছে। সেখান থেকেও কোন রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্ত এবং সিআইডির রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।