উচ্চতা মাপার স্কেল দিয়ে উচ্চতা মাপা, ওজন মাপা, আই চার্ট দেখে সহপাঠীদের দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা করে তারা। চিকিৎসকদের মত গায়ে সাদা অ্যাপ্রোন। স্কুল সহপাঠীদের স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছে, তারা 'ক্ষুদে ডাক্তার'। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ থেকে ১২ বছর বয়সী একদল ক্ষুদে ডাক্তার তাদের স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বুধবার (২৪ আগষ্ট) এমনই চিত্র দেখা যায় ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে।
জানা যায়, শিশুর মাধ্যমে শিশুদের স্বাস্থ্য-শিক্ষা দেওয়ার লক্ষ্যে ২০১১ সাল থেকে ক্ষুদে ডাক্তার কর্মসূচি শুরু করা হয়। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর গত ১৭ আগস্ট এক বিজ্ঞপ্তিতে ২০-২৬ আগস্ট সারাদেশের ক্ষুদে ডাক্তারদের মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার নির্দেশনা দেয়। তাই ক্ষুদে ডাক্তারেরা নিজ বিদ্যালয়ের সহপাঠীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু করে। ক্ষুদে ডাক্তাররা স্বাস্থ্য পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের ওজন, উচ্চতা ও দৃষ্টিশক্তি পরিমাপ করে। উপজেলার ২৩৮ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩৪৭০ জন ক্ষুদে ডাক্তার এই কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে। প্রায় ৪৪ হাজার শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছে ক্ষুদে ডাক্তাররা।
উপজেলার বনগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী উষা মনি বলেন, এই কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে ভালো লাগছে। আমরা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য তথ্য লিপিবদ্ধ করে রেখেছি। কারও কোন সমস্যা থাকলে (দায়িত্ব পালনকারী) শিক্ষককে সেটা জানিয়ে দেই। পরে শিক্ষক অভিভাবকদের সাথে কথা বলেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাইনদাইন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, ক্ষুদে ডাক্তাররা স্বাস্থ্য সম্পর্কিত জ্ঞানকে ছড়িয়ে দিচ্ছে। শিশুদের স্বাস্থ্য সচেতন করে তুলতে এ কার্যক্রম খুবই ফলপ্রদ। কোন শিশুর ওজন, উচ্চ ও চোখের দৃষ্টিতে সমস্যার থাকলে ক্ষুদে ডাক্তাররা আমাদের জানালেই সেই শিক্ষার্থীর অভিভাবককের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করি।
গফরগাঁও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সাইফুল মালেক বলেন, শিশুরা উন্নত জীবনের স্বপ্ন দর্শনে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা রোগজীবাণু সম্পর্কে ধারণা ও ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা হাতে-কলমে শিখতে পারছে। এই কার্যক্রমের পরিধি আরও বাড়ানো উচিত বলে তিনি মনে করেন।