রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে জ্বালানি সংকটে পড়েছে ইউরোপ। গুরুত্বপূর্ণ পণ্যটিকে কেন্দ্র করে এরইমধ্যে সেখানে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে আকাশচুম্বী হয়েছে। তবে ইউরোপীয় অঞ্চলের সব দেশে সংকটের চিত্র একরকম নয়। ফিনল্যান্ডে পরিবারে গড় খরচ বেড়েছে অতিরিক্ত চার শতাংশ। অন্যদিকে এস্তোনিয়ায় খরচ বেড়েছে ২০ শতাংশ। দেশ দুইটির পরিসংখ্যান দেখলেই মহাদেশটির অর্থনৈতিক চিত্র বোঝা যায়। ইউরোপীয়রা তাদের আয়ের এক-দশমাংশ জ্বালানিতে ব্যয় করছে। ধনী পরিবারগুলোতে বড় বাড়ি ও গাড়ি থাকার প্রবণতা থাকে, তবে জ্বালানির ব্যয় বৃদ্ধি সাধারণত আয়ের পার্থক্যের মতো বড় নয়। এজন্য গরীবদের জ্বালানি খরচ বাজাটের তুলনা বেড়ে যাচ্ছে। দেশগুলোর মধ্যেও এ ধরনের সমস্যা দেখা যাচ্ছে। যেমন ইউরোপের পূর্বাঞ্চলের সাবেক দরিদ্র কমিউনিস্ট দেশগুলো সমৃদ্ধ নর্ডিক উত্তরের তুলনায় বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তাছাড়া দেশগুলোর ঝুঁকিতে থাকার অন্যতম কারণ হলো প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর নির্ভরশীলতা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে এরইমধ্যে গ্যাসের পাইকারি মূল্য দ্বিগুণ হয়েছে। একসঙ্গে কয়লার দামও বেড়েছে। এদিকে নবায়নযোগ্য জ্বালানির মূল্য অপরিবর্তিত রয়েছে। সুইডেনে বিদ্যুতের তিন শতাংশেরও কম আসে গ্যাস থেকে। বাকি বিদ্যুৎ আসে পারমাণবিকসহ অন্যান্যখাত থেকে। সুইডেনের বাড়িগুলো কমিউনাল ব্যবস্থাসহ কয়েকটি পদ্ধতিতে উত্তপ্ত করা হয়। এসব পদ্ধতির ফলে দেশটির পরিবারগুলোতে খরচ বেড়েছে পাঁচ শতাংশ। যুক্তরাজ্যে এই খরচ বেড়েছে ১০ শতাংশ। কারণ যুক্তরাজ্য প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল। অঞ্চলটির দেশগুলোতে জ্বালানির খুচরা ও পাইকারি দামও ভিন্ন। বাজার কাঠামোও একই রকম নয়। যেমন স্পেনে ভোক্তা শুল্ক প্রত্যেক মাসেই আপডেট করা হয়। পোল্যান্ডে বছরে দুই বার সমন্বয় করা হয়। কিছুকিছু দেশ রয়েছে যেখানে জ্বালানির দামে খুব বেশি পরিবর্তন আনা হয় না। অঞ্চলটির অধিকাংশ দেশের জ্বালানি আসে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে। ফলে যেসব দেশ মূলত প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল তারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।