স্লিপের টাকা নয়-ছয়,নিম্নমানের উপকরণ কিনে সরকারি অর্থ তছরুপের ঘটনার পর শোকের মাসে গাছের চারা রোপন না করে নিমগাছের ডাল লাগিয়ে ফটোসেশন করে আলোচনায় আসেন পাবনার চাটমোহর উপজেলার কুমারগাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মুকিতুন নাহার। গাছের ডাল লাগানোর বিষয়ে ওই স্কুলের অভিভাবক সদস্যরা চাটমোহর উপজেলা চেয়ারম্যান,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে লিখিত অভিযোগ দিয়ে ওই প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। ওই প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম নজরুল ইসলাম। উপজেলা শিক্ষা অফিসার খন্দকার মোঃ মাহবুবুর রহমান ওই প্রধান শিক্ষিকাকে শোকজ করেন এবং তিন কর্মদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলেন। জবাবও দিয়েছেন প্রধান শিক্ষিকা। কিন্তু তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হবেনা মর্মে একাধিক সূত্র জানায়। উপজেলা শিক্ষা অফিসারও সে রকম কথাই বললেন। তিনি বললেন,‘শোক দিবসে তিনি কোন ডাল লাগাননি। আগে লাগিয়েছিলেন। তাছাড়া এলাকায় গ্রুপিং রয়েছে। তার শিকার প্রধান শিক্ষিকা। পরে গাছের চারা লাগানো হয়েছে। তিনি আরো বললেন,আমিতো কোন ব্যবস্খা নিতে পারিনা। জেলাতে প্রতিবেদন পাঠাবো।”
সম্প্রতি প্রধান শিক্ষিকা মুকিতুন নাহার শোকের মাস উপলক্ষে স্কুলে বৃক্ষরোপনের পরিবর্তে নিমের ডাল লাগিয়ে ফটোসেশন করে সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত টাকা হজমের অপচেষ্টা করেন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরও এতে সায় ছিল বলে ওয়াকিবহাল মহলের অভিমত। কিন্তু বিষয়টি জানাজানি হলে অর্থ আত্মসাতের পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। শোক দিবসের পরে দু’চারটি গাছ লাগিয়ে বাকি অর্থ নয়-ছয় করে মিলিয়েছেন। শুধু তাই নয়,ম্যানেজ করেছেন কমিটির সদস্য ও এলাকার প্রধানদেরও। কমিটির অভিভাবক সদস্য শাহ আলম বললেন,ভাই হেড মাস্টার সবার কাছে মাফ চেয়েছে। যা হবার হয়েছে। আর দরকার নাই।
ঘটনার বিষয়ে সরেজমিনে স্কুলে গেলে প্রধান শিক্ষিকা জানান,নানা কারণে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা কমে গেছে। ৮জন শিক্ষকের বিপরীতে রয়েছে ১১৬ জন শিক্ষার্থী। কিন্তু স্কুলে উপস্থিতি আরো কম। এ বিষয়ে শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তাদের কোন নজরদারি নেই। এলাকাবাসী সকল বিষয়ে তদন্ত দাবি করেছেন। বিগত ৫ বছরে এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরকার কত টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। কোন খাতে কত টাকা ব্যয় হয়েছে। একটি প্রতিষ্ঠান থেকে নিম্নমানের উপকরণ কেনারও অভিযোগ রয়েছে। গাছের ডাল লাগানোর বিষয়টি ভুল ছিল বলে জানিয়েছিলেন প্রধান শিক্ষিকা। এজন্য তিনি সাংবাদিকদের ম্যানেজ করাও অপচেষ্টা করেন।
এ ব্যাপারে পাবনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার খন্দকার মনসুরুর রহমানকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তাঁর মতামত নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ আঃ হামিদ মাস্টার বলেন,শোকের মাসে কোন অবমাননাকর বিষয় মানা হবেনা। আমি খোঁজ নিয়ে বিষয়টি সত্য হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবেনা। সরকারি অর্থ সঠিকভাবে ব্যয় না হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।