বিদ্যুৎ খরচ বাঁচাতে সরকার অফিস কার্যক্রম সীমিত করেছে। সীমিত করেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সময়সীমা। একইসাথে বিদ্যুৎ অপচয় করা থেকে বিরত থাকতে সবাইকে আহবান করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কিন্তু এসবের কোন কিছুরই তোয়াক্কা নেই বরিশাল নগরী সংলগ্ন শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত (দপদপিয়া) সেতুতে। ওই সেতুর টোল আদায়ের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এম খান গ্রুপের কর্মচারীদের সড়কবাতি জ্বালানো ও নেভানোর কথা থাকলেও এসবে তারা কোন ভ্রক্ষেপ করছেন না। ফলে রাত-দিন ২৪ ঘন্টা জ্বলছে ওই সেতুর সড়কবাতি।
সরেজমিনে (২৫ আগস্ট) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে দেখা গেছে, সেতুর দুই পাশের সবগুলো সড়কবাতি জ্বলছে। সেতু সংলগ্ন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ছাত্রাবাসের একাধিক শিক্ষার্থীরা জানান, সেতুতে প্রায় সব সময়ই সড়কবাতি জ্বালানো থাকে। একসময় অনেকগুলো লাইট কেটে গিয়েছিল। তখন অন্ধকারে থাকত সেতু। পরবর্তীতে লাইট লাগানোর পর কেউ আর দেখভাল করছে না। তাই দিন-রাত সবসময় সেতুর সড়ক বাতি জ্বলে থাকে।
সেতু পার হওয়া পরিবহন চালক আবদুর রশিদ বলেন, শুধু আজকে (২৫ আগস্ট) নয়: প্রায় সময়ই দেখি দিনেও সেতুর সড়ক বাতি জ্বলে থাকছে। এতে বিদ্যুৎ অপচয় হচ্ছে। তাই বিষয়টি সড়ক বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের দেখা উচিত। পথচারী আরিফ হোসেন বলেন, সরকারের নির্দেশ যদি সরকারী প্রতিষ্ঠান না মানে তাহলে আমরা নিরুৎসাহিত হই। মানুষ দেখছে বিনাকারণে দিনের বেলাও সেতুর সড়কে শত শত লাইট জ্বলছে। তাহলে যারা টাকা দিয়ে বাসাবাড়িতে বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন, তারা সাশ্রয়ী হবেন কেন?
আরেক পথচারী মিরাজ হোসেন বলেন, বিদ্যুৎ অপচয়রোধ করার জন্য সরকার রাত আটটার মধ্যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। অথচ সড়ক বিভাগের সেতুতে ২৪ ঘণ্টা বাতি জ্বলছে। এসব মনিটরিং করা উচিত।
এ ব্যাপারে সেতুর টোল আদায়কারী প্রতিষ্ঠান এম খান গ্রুপের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান খানের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিসিভ না করায় কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে টোল আদায়কারী এক কর্মচারী বলেন, পদ্মা সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচলের পর দক্ষিণাঞ্চলে পরিবহনের সংখ্যা আগের চেয়ে প্রায় তিনগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই সারাদিন টোল আদায় নিয়ে আমাদের ব্যস্ত থাকতে হয়। যেকারণে সেতুর সড়ক বাতির দিকে কারো কোন খেয়াল নেই।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ মাহমুদ সুমন বলেন, দিনে সেতুর সড়কবাতি জ্বালিয়ে রাখার কথা না। তারপরেও কী কারণে এমনটি ঘটেছে, তার খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।