দীর্ঘ ১৫ বছর পর গৃহবধু ধর্ষন মামলার রায় প্রদান করা হয়েছে। রংপুর নগরীর লালবাগ খামার এলাকায় এক গৃহবধুকে রিকশা থেকে টেনে হেচরে তুলে নিয়ে ধর্ষনের অভিযোগে আসামি মমিনুল ইসলাম বাবুকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত ১ এর বিচারক মোস্তফা কামাল এ রায় প্রদান করেন। রায় ঘোষনার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে পুলিশী পাহারায় কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার বিবরনে জানা গেছে ২০০৭ সালের ২৬শে মে তারিখে ভোর সোয়া ৬ টার দিকে রংপুর নগরীর তাজহাট রেলওয়ে বস্তিতে বসবাসকারী গৃহবধু প্রতিবেশি ফুফুর বাড়ি থেকে রিকশা চালক মনোয়ারুল ইসলামের রিকশায় করে নগরীর পীরপুর থেকে লালবাগ দিয়ে মর্ডান মোড়ে যাবার সময় সকাল আনুমানিক সাড়ে ৬ টার দিকে নগরীর লালবাগ খামার সংলগ্ন এলাকায় আসলে আসামি মমিনুল ইসলাম বাবু (৩০) পিতা আবদুস সাত্তার বাসা লালবাগ কেডিসি মোড় আসামি আসাদুল পিতা আবদুল জলিল এরশাদনগর, ও রজ্ঞু মিয়া পিতা আবদুল আউয়াল আশরতপুর ঢাকাইয়া পট্টি রিকশার গতিরোধ করে টেনে হেচড়ে জোর করে খামার এলাকার পুর্বদিকে একটি গাছের নীচে খুপরি ঘরে নিয়ে গিয়ে আসামি আমিনুল ইসলাম বাবু জোর পুর্ব্বক ধর্ষন করে।এ সময় অন্য দুই আসামি বাইরে দাঁড়িয়ে পাহারা দেয়। পরে আমার আত্মচিৎকারে আশে পার্শ্বের লোকজন এগিয়ে এলে আসামিরা পালিয়ে যায় কিন্তু এলাকাবাসী আসামি আসাদুলকে আটক করে নগরীর মাহিগজ্ঞ পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে গিয়ে সোপদ্দ করে। এ ঘটনায় পরেরদিন ওই গৃহবধু নিজেই বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন।
মামলা দায়ের করার পর পুলিশ ধর্ষিতা গৃহবধুর শারীরিক পরীক্ষার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজে ফরেনসিক বিভাগে পাঠায়। পরীক্ষায় ধর্ষনের আলামত মিলেছে মর্মে ডাক্তার প্রতিবেদন প্রদান করে। তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা এস আই আজিজুল ইসলাম তিন আসামীর বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ১৭ জুলাই আদালতে চার্জসীট দাখিল করে। মামলায় ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে আসামি আমিনুল ইসলাম বাবুকে দোষি সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডের রায় প্রদান করেন। অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় অপর দুই আসামি আসাদুল ও রজ্ঞুকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন আদালত। বাদী পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী আইনজিবী বিশেষ পিপি রফিক হাসনাইন অ্যাডভোকেট জানান দীর্ঘ ১৫ বছর পরে হলেও ভিকটিম ন্যায় বিচার পেয়েছে সে কারণে এ রায়ে আমরা সন্তোষ প্রকাশ করছি। অন্যদিকে রায় ঘোষনার সময় আসামি পক্ষের কোন আইনজিবী আদালতে উপস্থিত না থাকায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।